ঢাবি ছাত্র হাফিজুরের মৃত্যুকে অস্বাভাবিক বলছেন উপাচার্য

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান
ফাইল ছবি, প্রথম আলো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হাফিজুর রহমানের নিহত হওয়ার ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান৷ ঘটনাটিকে অস্বাভাবিক উল্লেখ করে তিনি দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত করে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অনুরোধ জানিয়েছেন৷ নিখোঁজের আট দিন পর গতকাল রোববার লাশ শনাক্ত হয় হাফিজুরের।

আজ সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উপাচার্যের এ অনুরোধের কথা জানানো হয়৷

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান হাফিজুর রহমানের এ অস্বাভাবিক মৃত্যুর বিষয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তদন্ত করে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দিতে সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারকে বিশেষভাবে অনুরোধ করেছেন৷ এ ছাড়া উপাচার্য বিষয়টি সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন তৈরি করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেওয়ার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকেও নির্দেশ দিয়েছেন।

আরও পড়ুন

আট দিন নিখোঁজ থাকার পর গতকাল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র হাফিজুরের লাশ শনাক্ত করে তাঁর পরিবার। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দায়ের কোপে ‘আত্মহত্যা’ করেছেন তিনি৷ হাফিজুর বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিভিত্তিক সংগঠন ঢাকা ইউনিভার্সিটি মাইম অ্যাকশনের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। ১৫ মে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ঢাকায় ফেরেন তিনি৷ সেদিন সন্ধ্যা থেকেই নিখোঁজ ছিলেন হাফিজুর।

আরও পড়ুন
হাফিজুর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের ছাত্র ছিলেন
ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

পুলিশ বলছে, দায়ের কোপে আত্মহত্যা করেছেন এ যুবক। শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মামুন অর রশিদ হাফিজুরের আত্মহত্যার ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘১৫ মে রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বহির্বিভাগের সামনে ভ্রাম্যমাণ ডাবের দোকান থেকে দা নিয়ে তা দিয়ে নিজের গলায় কোপ দিচ্ছিলেন ২৩-২৪ বছরের এক যুবক। সে সময় তাঁর গলা থেকে প্রচুর রক্ত ঝরছিল।

কোপানোর সময় তিনি বারবার বলছিলেন, “আমাকে মাফ করে দাও, আমাকে মাফ করে দাও।” সেখানে থাকা পথচারীরা তাঁকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। পরে সেখানে দায়িত্বরত শাহবাগ থানার দারোগা আল আমিনসহ কয়েক পুলিশ সদস্য তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে রিকশায় উঠিয়ে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়ার চেষ্টা করেন। তখন তিনি রিকশা থেকে লাফ দিয়ে নেমে পড়েন এবং বলতে থাকেন, “আমি চিকিৎসা করাব না, আমাকে মাফ করে দাও।” পরে অন্য লোকজনের সহযোগিতায় তাঁকে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়।’

ওসি মোহাম্মদ মামুন অর রশিদ বলেন, খবর পেয়ে ওই রাতেই তিনি ঢাকা মেডিকেলে যান। মেডিকেলে তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। তাঁকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয় এবং প্রয়োজনীয় রক্তের ব্যবস্থাও করা হয়। বাঁচানোর ‘সর্বোচ্চ চেষ্টা’ করলেও রাত সাড়ে ১২টার দিকে তিনি মারা যান। পরে সিআইডি টিমসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আসেন।