দুই মামলায় ইরফান ও তাঁর দেহরক্ষী ৫ দিন রিমান্ডে

ইরফান সেলিমকে র‍্যাব গ্রেপ্তার করে
ফাইল ছবি

এবার অস্ত্র ও মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনের পৃথক দুই মামলায় সাংসদ হাজি সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিম ও তাঁর দেহরক্ষী জাহিদুল মোল্লার মোট পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত আজ রোববার এই আদেশ দেন। প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অপরাধ ও তথ্য বিভাগের উপপরিদর্শক (এসআই) শওকত আকবর।

এর আগে আজ সকালে আসামি ইরফান ও তাঁর দেহরক্ষী জাহিদকে আদালতে হাজির করা হয়। অস্ত্র ও মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনের পৃথক দুই মামলায় তাঁদের প্রত্যেককে ৭ দিন করে মোট ১৪ রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার আবেদন করে পুলিশ।

অপর দিকে ইরফান ও জাহিদের পক্ষে রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করা হয়।

আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় ইরফান ও জাহিদকে তিন দিন করে এবং মাদক নিয়ন্ত্রণে আইনের মামলায় প্রত্যেককে দুই দিন করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন।

নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিফ আহম্মেদ খানকে মারধরের ঘটনায় করা মামলায় ইরফানকে দুই দফায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। এই মামলায় ইরফানের দেহরক্ষী জাহিদ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। একই মামলায় কারাগারে আছেন ইরফানের সহযোগী এ বি সিদ্দিক ওরফে দীপু এবং ইরফানের গাড়িচালক মিজানুর রহমান।

গত ২৬ অক্টোবর রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় ইরফান সেলিমসহ চারজনের বিরুদ্ধে মারধর ও হত্যাচেষ্টার মামলা করেন নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ আহমেদ খান।

ওয়াসিফ আহমেদ খান অভিযোগ করেন, আগের দিন রাতে স্ত্রীকে নিয়ে তিনি মোটরসাইকেলে বাড়ি ফিরছিলেন। ধানমন্ডির ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে পেছন থেকে তাঁর মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয় সংসদ সদস্যের স্টিকারযুক্ত একটি গাড়ি। ওয়াসিফ নিজের পরিচয় দিলেও গাড়ি থেকে নেমে একজন গালিগালাজ করে হত্যার হুমকি দিয়ে চলে যান। এরপর গাড়িটি কলাবাগান বাসস্ট্যান্ড সিগন্যালে দাঁড়ালে ওয়াসিফ মোটরসাইকেল নিয়ে সেখানে গিয়ে গাড়ির জানালায় টোকা দিয়ে নিজের পরিচয় দেন এবং কথা বলতে চান। গাড়ির ভেতরে থাকা লোকজন কোনো কথা না বলে তাঁকে উপর্যুপরি মারধর করেন। তিনি জানতে পারেন, তাঁর ও তাঁর স্ত্রীর ওপর হামলাকারী সাদা পাঞ্জাবি পরিহিত ব্যক্তি হাজি সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিম। এর বাইরেও এজাহারে তিনি আরও তিনজনের নাম উল্লেখ করেন। তাঁরা হলেন এ বি সিদ্দিক দীপু, জাহিদ ও মিজানুর রহমান। মামলার চার আসামিই গ্রেপ্তার আছেন।

নৌবাহিনীর কর্মকর্তাকে মারধরের জেরে ২৬ অক্টোবর পুরান ঢাকার বড় কাটরায় ইরফানের বাবা সরকারদলীয় সাংসদ হাজি সেলিমের বাড়িতে অভিযান চালায় র‍্যাব। এ সময় র‍্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত মাদক রাখার দায়ে ইরফানকে এক বছর কারাদণ্ড ও অবৈধ ওয়াকিটকি রাখার কারণে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন। ইরফানের দেহরক্ষী জাহিদুলকে ওয়াকিটকি বহন করার দায়ে ছয় মাস সাজা দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

এ ছাড়া বাসা থেকে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারের ঘটনায় ইরফান ও জাহিদুলের বিরুদ্ধে চারটি মামলা করে র‍্যাব। রাজধানীর চকবাজার থানায় মামলাগুলো হয়।

ইরফানকে নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধ এবং অসদাচরণের অভিযোগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।