নিখোঁজের প্রায় ৩০ ঘণ্টা পর পাওয়া গেল ইন্টার্ন চিকিৎসককে

রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক শামীম খানকে (২৫) নিখোঁজ হওয়ার প্রায় ৩০ ঘণ্টা পর পাওয়া গেছে। গতকাল শনিবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ের সামনে থেকে তাঁকে অচেতন অবস্থায় পাওয়ার পর তাঁর ভাইয়ের কাছে দেওয়া হয়েছে।
শামীমকে গত শুক্রবার দুপুরে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে অপহরণের অভিযোগে সেদিনই তাঁর এক সহপাঠী শেরেবাংলা নগর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন। তাঁকে উদ্ধারের দাবিতে গতকাল দুপুরে প্রায় এক ঘণ্টা তাঁর সহপাঠী ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের সামনের সড়ক অবরোধ করেন।
শামীম খানের বড় ভাই সোলায়মান হোসেন খান গত রাত একটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, রাতে ডিবি অফিস থেকে তাঁকে ফোন করে জানানো হয়, শামীমকে কে বা কারা অচেতন অবস্থায় ডিবি কার্যালয়ের সামনে ফেলে রেখে গেছে। এরপর তিনি ডিবি কার্যালয়ে যান। রাত সাড়ে নয়টার দিকে তিনি ভাইকে নিয়ে বাসার উদ্দেশে রওনা হন। তিনি বলেন, শামীম অচেতন ছিল। তাই বলতে পারছে না কোথায় তাকে রাখা হয়েছিল। তবে বাসায় ফেরার পর শামীম সুস্থ হয়েছে।
এ ব্যাপারে শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিজি বিশ্বাস বলেন, পুলিশ শামীমকে উদ্ধার করেনি। তাঁর পরিবারও এ বিষয়ে পুলিশকে কিছু জানায়নি।
এর আগে বিকেলে সোলায়মান হোসেন খান প্রথম আলোকে বলেছিলেন, শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে শামীমের অজান্তে তাঁর সেলফোনে ২০০ টাকা আসে। কিছুক্ষণ পর ওই টাকা ফেরত দেওয়ার অনুরোধ করে এক ব্যক্তি শামীমকে ফোন করেন। হাসপাতালে শামীমের ডিউটি শেষ হওয়ার পর ওই নম্বর থেকে বেলা দুইটার দিকে আবারও ফোন আসে। শামীমকে ওই ব্যক্তি বলেন যে তিনি শেরেবাংলা নগর এলাকায় আছেন। এ কথা জেনে ওই টাকা ফেরত দিতে শামীম তাঁর সহপাঠী হাসনাইনের সঙ্গে হাসপাতালের সামনে আসেন। এ সময় সেখানে তিন-চারজন যুবক একটি মাইক্রোবাসে তাঁকে জোর করে তুলে নিয়ে দ্রুতগতিতে আসাদগেটের দিকে চলে যান। হাসনাইন এ ঘটনায় শুক্রবার বিকেলে শেরেবাংলা নগর থানায় জিডি করেন। তিনি বলেন, শামীমের সঙ্গে কারও কোনো বিরোধ ছিল না। এমনকি তিনি রাজনীতির সঙ্গেও জড়িত নন।
শামীমকে উদ্ধারের দাবিতে গতকাল বেলা পৌনে একটা থেকে এক ঘণ্টা সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের সামনে মিরপুর সড়ক অবরোধ করেন তাঁর সহপাঠীরা। এর কিছুক্ষণ আগে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের টিকিট বিক্রি বন্ধ করে দেন তাঁরা। প্রশাসন শামীমকে খুঁজে বের করার আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা বেলা পৌনে দুইটার দিকে অবরোধ তুলে নেন। তবে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে শামীমের সন্ধান পাওয়া না গেলে আবারও আন্দোলনে নামার কথা বলেন তাঁরা।
সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের পরিচালক উত্তম কুমার বড়ুয়া প্রথম আলোকে বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ পুলিশ ও র্যাবকে ঘটনা সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে সর্বোচ্চ সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।