প্রস্তুতি থাকলে দুর্যোগের ৭৬ শতাংশ ক্ষতি কমানো যায়: গবেষণা

বুধবার বিকেলে রাজধানীর বিআইডিএসের কার্যালয়ে গবেষণাপত্রটি উপস্থাপন করা হয়
ছবি: প্রথম আলো

পূর্বপ্রস্তুতি থাকলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলেও ক্ষয়ক্ষতি কমানো সম্ভব। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুতি থাকলে এবং আয়ের উৎস বন্ধ না হলে প্রতিটি পরিবার তাদের বার্ষিক আয়ের ৭৬ শতাংশ পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতি কমাতে পারে। এ ছাড়া প্রস্তুতি থাকলে এবং বেতন-ভাতায় সমস্যা না হলে চাকরিজীবী পরিবারের বার্ষিক আয়ের ৮১ শতাংশ ক্ষতি কমাতে পারে।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) একটি গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। বুধবার বিকেলে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত বিআইডিএসের কার্যালয়ে ‘দ্য নিউ ডিটারমিনেশন অব হাউসহোল্ড ডিজাস্টার প্রিপেয়ার্ডনেস বিহেভিয়ার অ্যান্ড পলিসি ইফিসিয়েন্সি অন বাংলাদেশি হাউসহোল্ডস’ শীর্ষক গবেষণাপত্রটি উপস্থাপন করেন বিআইডিএসের রিসার্চ ফেলো আজরিন করিম। দেশের ৬৪ জেলার প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ এলাকার ১ লাখ ৪৩ হাজার ৯৮০টি পরিবারের তথ্যের ভিত্তিতে এ গবেষণা করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে বিআইডিএসের মহাপরিচালক বিনায়ক সেন বলেন, দুর্যোগ হলে সাহায্য-সহযোগিতা করা, ত্রাণ তহবিল করা ও বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছে দেওয়া—এসব না করে সংকট হওয়ার আগেই যদি প্রস্তুতি নেওয়া যায়, তাহলে তা মোকাবিলা করা সহজ হয়।

বিআইডিএসের রিসার্চ ফেলো আজরিন করিম বলেন, মানুষ প্রাকৃতিক দুর্যোগকে ভয় পায় আর প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রস্তুতিসম্পন্ন মানুষকে ভয় পায়। তাদের গবেষণা বলছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুতি থাকলে ক্ষয়ক্ষতি কমানো যায়।

দেশে শিক্ষাব্যবস্থায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ সম্পর্কে সচেতনতার সুযোগ কম বলেও এ গবেষণায় উল্লেখ করা হয়। থাইল্যান্ডের শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে তুলনা করে বলা হয়, বাংলাদেশের আনুষ্ঠানিক শিক্ষা প্রাকৃতিক দুর্যোগ সম্পর্কে ১ দশমিক ৪৬ শতাংশ ধারণা দেয়। সেখানে থাইল্যান্ডে আনুষ্ঠানিক শিক্ষায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ সম্পর্কে ১১ শতাংশের বেশি ধারণা দেওয়া হয়। তবে দেশের এই আনুষ্ঠানিক শিক্ষার সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক খাতের পরিবারের নারীরা যুক্ত হলে সেই পরিমাণ দাঁড়ায় ৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ।

পাঠ্যবইয়ের উদাহরণ দিয়ে বিআইডিএসের রিসার্চ ফেলো আজরিন করিম বলেন, পঞ্চম শ্রেণির বইয়ে দেখা যায়, প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়ে ছোট একটা অংশ রয়েছে। কোন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ হচ্ছে এ দেশে, তার নাম দেওয়া নেই। এখানে আরও কাজ করতে হবে।

অনানুষ্ঠানিক শিক্ষাকে আরও গুরুত্ব দেওয়ার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, অনানুষ্ঠানিক খাতগুলোকে লক্ষ্য করে যদি ছোট ছোট শিক্ষা কার্যক্রম করা হয়, সেটা হয়তো আরও ভালো কাজ করবে।

নারীদের সচেতনতার ওপর জোর দিয়ে বিনায়ক সেন বলেন, নারীদের দুর্যোগ মোকাবিলা–সংক্রান্ত জ্ঞান দেওয়া খুবই জরুরি। দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুতি নেওয়ার ক্ষেত্রে অনানুষ্ঠানিক জ্ঞান খুবই গুরুত্বপূর্ণ।