বন্ধ পাটকল চালুর দাবিতে সমাবেশ, বিজেএমসি কার্যালয় ঘেরাও

রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশে করে শ্রমিক-কৃষক-ছাত্র-জনতা ঐক্য
ছবি: প্রথম আলো

বন্ধ করে দেওয়ার দুই বছর পার হতে চললেও দেশের ৫টি পাটকলের প্রায় ১১ হাজার শ্রমিক বকেয়া বেতন বুঝে পাননি। পাটকলশ্রমিকদের এই পাওনা পরিশোধ ও রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে বন্ধ পাটকল চালুর দাবি জানিয়েছে পাটকল রক্ষায় গঠিত সংগঠন শ্রমিক-কৃষক-ছাত্র-জনতা ঐক্য। আজ সোমবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক সমাবেশে এই দাবি জানান শ্রমিকনেতারা।

সমাবেশে শ্রমিক-কৃষক-ছাত্র-জনতা ঐক্যের আহ্বায়ক রুহুল আমিন বলেন, ২৫টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধ করায় ৭০ হাজার শ্রমিক কাজ হারিয়েছেন। তিনি বলেন, খুলনার খালিশপুর, ঢাকার লতিফ বাওয়ানি ও করিম জুট মিল, চট্টগ্রামের আমিন জুট মিল, সিরাজগঞ্জের জাতীয় জুট মিলের মতো শিল্প এলাকা পাটকল বন্ধের কারণে মৃত নগরীতে পরিণত হয়েছে।

সমাবেশে অন্যদের মধ্যে সংগঠক নিয়াজ মোর্শেদ দুলাল, মিহির বৈদ্যনাথ, আলমগীর হোসেন, রুবেল হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন। তাঁরা বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধের কারণে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন সারা দেশের ৪০ থেকে ৪৫ লাখ পাটচাষি। কারণ, রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল চালু থাকা অবস্থায় তারা (বিজেএমসি) মোট উৎপাদিত পাটের ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ কাঁচা পাট নির্ধারিত দামে বিক্রি করত। ফলে অবশিষ্ট বেসরকারি পাটকল মালিকেরা সরকার নির্ধারিত দামের কাছাকাছি দামে পাট কিনতে বাধ্য হতেন। কিন্তু এখন আর সেই সুযোগটাও থাকল না। ফলে এখন পাটচাষিদের অবস্থা আরও খারাপ হবে।

সমাবেশ থেকে চার দফা দাবি তুলে ধরেন নেতারা। সেগুলো হলো—পাঁচটি জুট মিলের (খালিশপুর জুট মিল, দৌলতপুর জুট মিল, জাতীয় জুট মিল, আর আর জুট মিল ও কে এফ ডি জুট মিল) সব বকেয়া পাওনা অবিলম্বে পরিশোধ করতে হবে; রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে অতিসত্বর চালু করে পর্যায়ক্রমে আধুনিকায়ন করতে হবে; নাম জটিলতায় ভুক্তভোগী স্থায়ী ও বদলি শ্রমিকদের সব বকেয়া পাওনা পরিশোধ করতে হবে ও সব শ্রমিকের নামে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।

সমাবেশ শেষে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পাটকলশ্রমিকেরা একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে মতিঝিলে গিয়ে বিজেএমসি কার্যালয় ঘেরাও করেন। বেলা তিনটার দিকে আন্দোলনকারীদের আট সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল বিজেএমসি চেয়ারম্যান মো. সালাউদ্দিনের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের দাবি জানান।

শ্রমিক-কৃষক-ছাত্র-জনতা ঐক্যের আহ্বায়ক রুহুল আমিন বলেন, বিজেএমসি চেয়ারম্যান তাঁদের দাবি সম্পর্কে অবগত হয়েছেন। এ সময় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।

আরও পড়ুন