বর্ষায় ফিরছে বুড়িগঙ্গা

বর্ষায় প্রাণ ফিরে পাচ্ছে বুড়িগঙ্গা। নদীতে মিলছে মাছ। সেই মাছ বিক্রি হচ্ছে নদীর তীরেই। ছবিগুলো বুড়িগঙ্গার কামরাঙ্গীরচর ও বছিলা এলাকা থেকে তোলা l প্রথম আলো
বর্ষায় প্রাণ ফিরে পাচ্ছে বুড়িগঙ্গা। নদীতে মিলছে মাছ। সেই মাছ বিক্রি হচ্ছে নদীর তীরেই। ছবিগুলো বুড়িগঙ্গার কামরাঙ্গীরচর ও বছিলা এলাকা থেকে তোলা l প্রথম আলো

বর্ষার পানিতে প্রাণ ফিরে পেয়েছে বুড়িগঙ্গা নদী। দূষণের কালো রং ফিকে হয়েছে ঘোলা জলের উচ্ছ্বাসে। জালে পড়ছে পুঁটি, ট্যাংরা, শিং, কই, বাইম, টাকি, খলশে, কালবাউশ, শোল, মাগুর, নলাসহ নানা মাছ। ছোট সে মাছই জেলেদের মুখে হাসি ফিরিয়ে দিচ্ছে। পাড়ের বাসিন্দাদের করছে নদীমুখী।

জেলে ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এবারের বিপুল বর্ষণ, নদীতে পানি বৃদ্ধি, হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি স্থানান্তর—সব মিলে এ মুহূর্তে বুড়িগঙ্গায় দূষণের পরিমাণ কম। এখন টানা জাল, খেয়া জাল, ঝাঁকি জাল, এমনকি কচুরিপানার নিচে মশারির কাপড় টানা দিলেও ধরা পড়ছে দেশীয় প্রজাতির মাছ। নদীকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে সরকারকে উদ্যোগী হওয়ার কথা বলছেন জেলেরা। ডাইং কারখানার দূষণ রুখতে পারলে নদীর পানির আরও উন্নতি হবে বলে জানান তাঁরা।

বর্ষায় প্রাণ ফিরে পাচ্ছে বুড়িগঙ্গা। নদীতে মিলছে মাছ। সেই মাছ বিক্রি হচ্ছে নদীর তীরেই। ছবিগুলো বুড়িগঙ্গার কামরাঙ্গীরচর ও বছিলা এলাকা থেকে তোলা l প্রথম আলো
বর্ষায় প্রাণ ফিরে পাচ্ছে বুড়িগঙ্গা। নদীতে মিলছে মাছ। সেই মাছ বিক্রি হচ্ছে নদীর তীরেই। ছবিগুলো বুড়িগঙ্গার কামরাঙ্গীরচর ও বছিলা এলাকা থেকে তোলা l প্রথম আলো

গতকাল সোমবার বেলা ১১টায় কামরাঙ্গীরচরের মুন্সি হাটের মোহাম্মদবাগ ঘাটে বুড়িগঙ্গায় জাল ফেলে মাছ ধরছিলেন জেলে জামাল উদ্দিন। তাঁর জালে ধরা পড়েছে পুঁটি, ট্যাংরা, শিং, বাইম, কালবাউশ ও বড় একটি মাগুর মাছ। হাসি ফোটে তাঁর মুখে। নদীর পাড়ে সেই মাছ কিনতে ভিড়ও জমিয়েছে ক্রেতারা।

মোহাম্মদবাগ ঘাটের পাশেই জামাল উদ্দিনের বাড়ি। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এক যুগের বেশি সময় ধরে প্রতিবছর বর্ষায় তিনি নদীতে মাছ ধরেন। কিন্তু এবার জালে বেশি মাছ ধরা পড়ছে। কয়েক দিন ধরে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত মাছ ধরে দিনে গড়ে দেড় হাজার টাকার মাছ বিক্রি করছেন তিনি। একই কথা বলেছেন জেলে মো. লোকমান ও সোলমান।

বর্ষায় প্রাণ ফিরে পাচ্ছে বুড়িগঙ্গা। নদীতে মিলছে মাছ। সেই মাছ বিক্রি হচ্ছে নদীর তীরেই। ছবিগুলো বুড়িগঙ্গার কামরাঙ্গীরচর ও বছিলা এলাকা থেকে তোলা l প্রথম আলো
বর্ষায় প্রাণ ফিরে পাচ্ছে বুড়িগঙ্গা। নদীতে মিলছে মাছ। সেই মাছ বিক্রি হচ্ছে নদীর তীরেই। ছবিগুলো বুড়িগঙ্গার কামরাঙ্গীরচর ও বছিলা এলাকা থেকে তোলা l প্রথম আলো

কামরাঙ্গীরচরের নিজামবাগ, ছাতা মসজিদ রোড, কেরানীগঞ্জ, বাদামতলী, শ্যামবাজার ও বছিলায় জাল দিয়ে মাছ ধরার দৃশ্য দেখা গেছে গতকাল। শিশু-কিশোরেরাও বড়শি ও মশারি দিয়ে মাছ ধরতে নদীতে নেমেছে। বড়শিতে ধরা পড়ছে টাকি, শোল ও মাগুর মাছ। কচুরিপানার নিচে মশারি ফেলে খলশে, পুঁটি, শিং ও কই মাছ ধরেছে অনেক শিশু। মাছ ধরা দেখতে নদীর পাড়ে ভিড় জমিয়েছে উৎসুক লোকজন। বুড়িগঙ্গায় বর্ষার পানিতে গোসলও করছে স্থানীয় ব্যক্তিরা।

নদীর পাড়ে কথা হয় কামরাঙ্গীরচরের ছাতা মসজিদ রোডের বাসিন্দা মোশাররফ হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বুড়িগঙ্গায় মাছ পাওয়া যাচ্ছে, এটা তো স্বপ্নের মতো লাগছে। এভাবে সারা বছর নদীতে মাছ পাওয়া গেলে মাছের চাহিদা কিছুটা পূরণ হতো। জেলেরাও ফিরে পেত তাদের জীবিকা।’

বর্ষায় প্রাণ ফিরে পাচ্ছে বুড়িগঙ্গা। নদীতে মিলছে মাছ। সেই মাছ বিক্রি হচ্ছে নদীর তীরেই। ছবিগুলো বুড়িগঙ্গার কামরাঙ্গীরচর ও বছিলা এলাকা থেকে তোলা l প্রথম আলো
বর্ষায় প্রাণ ফিরে পাচ্ছে বুড়িগঙ্গা। নদীতে মিলছে মাছ। সেই মাছ বিক্রি হচ্ছে নদীর তীরেই। ছবিগুলো বুড়িগঙ্গার কামরাঙ্গীরচর ও বছিলা এলাকা থেকে তোলা l প্রথম আলো