মুনিয়া সব সময় আমার খুব প্রিয় পাখি। ২০১৫ সাল থেকে যখন পাখির ছবি তোলা শুরু করি, মুনিয়া ছিল অন্যতম মডেল। তবে সেই সময় সবগুলো মুনিয়া দেখার সৌভাগ্য আমার হয়নি।
২০১৫ সালে শুনেছি বাংলাদেশে ৬ প্রজাতির মুনিয়া রয়েছে, এরা দেখতে ছোট হয় এবং খুব চঞ্চল। ঝাঁক বেঁধে ঘুরতে পছন্দ করে। তবে যখন মন দিয়ে খাবার খায় খুব কাছে যাওয়া যায় এদের। এদের মূল খাদ্য ঘাসের বিজ, কাউন, ধান—এই জাতীয় খাবার।
শুরুর দিকে আমি চার ধরনের মুনিয়ার ছবি তুলতাম, Scaly-breasted Munia বা তিলা মুনিয়া, Indian Silverbill বা দেশি চাঁদিঠোঁট মুনিয়া, Trio-Colored Munia বা তিনরঙা মুনিয়া এবং Chestnut Munia বা কালো মাথা মুনিয়া। সবগুলোর ছবিই রাজশাহী শহরের শিমলা পার্ক থেকে তোলা। এরপর শুরু হলো Red Avadavat বা লাল মুনিয়া আর Whited-rumped Munia বা ধলা কোমর মুনিয়া খোঁজা। খোঁজ পাওয়া যায় ঢাকার দিয়াবাড়িতে লাল মুনিয়া আছে। আর কুষ্টিয়া ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ধলা কোমর মুনিয়া আছে। কিন্তু সময়ের অভাবে যাওয়া হয় না সেদিকে, এমন সময় ২০১৭ সালেই রাজশাহীর পদ্মার চরে পাওয়া গেল লাল মুনিয়া, সে–ও ব্যাপকহারে। আমি নিজ চোখে অনেক বড় লাল মুনিয়ার ঝাঁক দেখেছি সেই চর মাঝার দিয়ারে এবং সেখানে নেস্টিংয়ের রেকর্ডও আছে প্রতিবছর। ৫টা হয়ে যাওয়ার পর ৬ নম্ববর মুনিয়ার জন্য ক্ষুধা বেড়ে গেল। তাই গ্রুপ ধরে ২০১৮ সালে গেলাম কুষ্টিয়া ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়, তুলে নিয়ে এলাম ৬ নম্বর মুনিয়া—ধলা কোমর মুনিয়া। তার ঠিক কিছুদিন পরেই রাজশাহীতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পাওয়া গেল এই ধলা কোমর মুনিয়া। আমার ৬ মুনিয়ার ছবিই রাজশাহী থেকে তোলা হয়েছে এটা আমার জন্য গর্বের রাজশাহীর ছেলে হিসেবে।
অনেকে এই পাখি অসৎ উদ্দেশ্যে খাঁচায় বিক্রি করে, যা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এই পাখা খাঁচায় পালা, মেরে খাওয়া, আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। পাখিদের বাঁচতে দিন তার নিজ ভুবনে। পৃথিবীর ভারসাম্য রক্ষায় এদের অবদান অনিবার্য।
* লেখক: প্রকৃতি ও পাখির আলোকচিত্রী