বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার রায় আজ

আবরার ফাহাদ
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হবে আজ রোববার। ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১–এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করবেন।

আবরার হত্যা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের অন্যতম সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আবু আবদুল্লাহ ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, মামলায় ২৫ আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়ে আদালতে আবেদন করেছেন তাঁরা। হত্যার অভিযোগ প্রমাণে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে ৬০ জন সাক্ষীর মধ্যে ৪৬ জনকে আদালতে হাজির করা হয়। ১৪ নভেম্বর উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে রায় ঘোষণার জন্য কাল রোববার দিন ধার্য করেছিলেন আদালত।

নিহত আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার ছেলের খুনের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের সবার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড যেন হয়। কেউ যেন খালাস না পায়। একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন হোক, যেন পড়াশোনা করতে এসে কেউ নির্যাতনের শিকার না হয়। কেউ যেন হত্যা করার সাহস না পায়।’

দুই বছর আগে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর বুয়েটের শেরেবাংলা হল থেকে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় আবরারের বাবা বাদী হয়ে চকবাজার থানায় হত্যা মামলা করেন।
মামলাটি তদন্ত করে বুয়েটের ২৫ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। এই ২৫ জনের মধ্যে ২২ জন কারাগারে রয়েছেন। পলাতক রয়েছেন তিনজন।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, আসামিরা পরস্পরের যোগসাজশে ছাত্রশিবিরের কর্মী সন্দেহে মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে আবরারকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, আদালতে সাক্ষ্যদানকালে আবরারের বাবা বলেছেন, আসামিরা পরিকল্পিতভাবে তাঁর ছেলেকে ডেকে নিয়ে ক্রিকেট স্ট্যাম্প, লাঠিসোঁটা ও রশি দিয়ে প্রচণ্ড মারধর করেন। ফলে তাঁর ছেলে মারা যান। পরে আসামিরা মরদেহ হলের দ্বিতীয় তলার সিঁড়িতে ফেলে রাখেন।

মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী আছেন মোশাররফ হোসেন কাজল, আবু আবদুল্লাহ ভূঁইয়া, আবদুস সোবহান তরফদার, প্রশান্ত কুমার কর্মকার, মিজানুর রহমান, আলমগীর হোসেন, শহিদুল ইসলাম ও মশিউর রহমান। আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন মাহাবুব আহমেদ, আমিনুল গণী, গাজী জিল্লুর রহমান, আজিজুর রহমান, ফারুক আহমেদ প্রমুখ।

অভিযোগপত্রভুক্ত ২২ আসামি হলেন মেহেদী হাসান রাসেল, মুহতাসিম ফুয়াদ হোসেন, মো. অনিক সরকার, মেহেদী হাসান রবিন, ইফতি মোশাররফ সকাল, মো. মনিরুজ্জামান মনির, মো. মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, মো. মাজেদুর রহমান মাজেদ, মো. মুজাহিদুর রহমান, খন্দকার তাবাককারুল ইসলাম তানভীর, হোসাইন মোহাম্মদ তোহা, মো. আকাশ হোসেন, মো. শামীম বিল্লাহ, এ এস এম নাজমুস সাদাত, মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম, মুয়াজ আবু হুরায়রা, মুনতাসির আল জেমি, অমিত সাহা, ইশতিয়াক আহমেদ মুন্না, মো. শামসুল আরেফিন রাফাত, মো. মিজানুর রহমান ও এস এম মাহমুদ সেতু।

পলাতক তিন আসামি হলেন মোর্শেদ-উজ-জামান মণ্ডল জিসান, এহতেশামুল রাব্বি তানিম ও মুজতবা রাফিদ।