মাস্ক ছাড়া ঢুকতে মানা, ট্রেনে অর্ধেক আসনে যাচ্ছেন যাত্রীরা

অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে যাচ্ছেন যাত্রীরাছবি: ড্রিঞ্জা চাম্বুগং

করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধের কারণে অর্ধেক আসনে যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যাচ্ছে ট্রেন। মুখে মাস্ক নেই, এমন ক্রেতার কাছে টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে না। এমনকি টিকিট থাকলেও মাস্ক না থাকলে স্টেশনের ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।

ট্রেনে অর্ধেক আসন ফাঁকা দেখা গেছে
ছবি: ড্রিঞ্জা চাম্বুগং

আজ শনিবার সকাল ১০টা থেকে কমলাপুর রেলস্টেশনে অবস্থান করে এ চিত্র দেখা গেছে। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এসব পদক্ষেপ নিয়েছে।
দেশে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন অমিক্রনের সংক্রমণরোধে গত সোমবার সার্বিকভাবে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এর পরদিন মঙ্গলবার আজ থেকে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত জানিয়েছিল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

সরেজমিনে দেখা যায়, স্টেশনে ঢুকতেই টিকিট যাচাই করছেন রেলের কর্মীরা। এ সময় টিকিট থাকলেও মুখে মাস্ক না থাকলে, যাত্রীকে ফিরিয়ে দিতে দেখা গেছে।
স্টেশনে ঢোকার পথেই একটি বোতলে জীবাণুনাশক রাখা হয়। পাশেই সেটা ব্যবহারের অনুরোধ করে লেখা একটি বিজ্ঞপ্তি। তবে যাত্রীদের এই স্যানিটাইজার খুব বেশি ব্যবহার করতে দেখা যায়নি।

ট্রেনে জীবাণুনাশক ছিটিয়ে দেওয়া হচ্ছে
ছবি: ড্রিঞ্জা চাম্বুগং

সকাল থেকে ঢাকা ছেড়ে যাওয়া একাধিক আন্তনগর ও লোকাল ট্রেনের ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, যাত্রীরা আসন ফাঁকা রেখে বসেছেন। তবে পরিচিত যাত্রীদের কেউ কেউ ট্রেনে উঠে পাশাপাশি বসেছেন। সঙ্গে ছোট সন্তান আছে, এমন অনেক অভিভাবক পাশের আসনে সন্তানকে বসিয়েছেন।

সিলেটগামী জয়ন্তিকা এক্সপ্রেসে করে যাচ্ছিলেন আনোয়ার হোসেন ও আফজাল করিম। পাশাপাশি দুজন বসেছেন৷ আফজাল বলেন, দুজন সহকর্মী, একই কাজে সিলেট যাচ্ছেন। টিকিট আলাদা আসনের হলেও পাশাপাশি বসেছেন।

এ ছাড়া স্টেশনে যাত্রীদের বসার তিন আসনের বেঞ্চগুলোতে মাঝের আসন ফাঁকা রেখে বসার নির্দেশ দিয়ে স্টিকার লাগানো হয়েছে। একাধিক যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অর্ধেক আসন ফাঁকা গেলেও ভাড়া বাড়েনি।

যাত্রীদের বসার আসনের মাঝখানে ফাঁকা রাখা হয়েছে
ছবি: ড্রিঞ্জা চাম্বুগং

তবে বিভিন্ন গন্তব্য থেকে ঢাকার কমলাপুরে পৌঁছানো ট্রেনে অর্ধেক আসন ফাঁকা দেখা যায়নি। কিছু ট্রেনে সব আসনের পাশাপাশি দাঁড়িয়েও যাত্রী আসতে দেখা গেছে।
দুপুর পৌনে ১২টায় জামালপুর কমিউটার ট্রেনে ঢাকা আসেন ব্যবসায়ী শহিদুল আলম। তিনি জয়দেবপুর থেকে ওই ট্রেনে ওঠেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ওঠার আগে থেকেই ট্রেনভর্তি যাত্রী ছিল। তবে ট্রেনে আসা অধিকাংশ যাত্রীর মুখে মাস্ক ছিল।’

কমলাপুর রেলস্টেশনের ম্যানেজার মোহাম্মদ মাসুদ সারোয়ার প্রথম আলোকে বলেন, সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। প্রতিটি ট্রেনে যাত্রা শুরু ও শেষে জীবাণুনাশক ছিটানো হচ্ছে। সকাল থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ১২টি আন্তনগর ও ৬টি লোকাল ট্রেন—প্রতিটি অর্ধেক আসনের যাত্রী নিয়ে ছেড়ে গেছে। কোনো স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে না।

রেলওয়ে সূত্র বলছে, ট্রেনের ধারণক্ষমতার অর্ধেক আসনের টিকিট অনলাইন ও কাউন্টার—দুই জায়গায় সমানভাবে বিক্রি অব্যাহত আছে। অর্থাৎ ৫০ শতাংশ টিকিট বিক্রি হচ্ছে অনলাইনে (অ্যাপ/অনলাইন)। আর বাকি ৫০ শতাংশ টিকিট স্টেশনের কাউন্টারে পাওয়া যাচ্ছে।