মেয়র হানিফ উড়ালসড়কে পথচারীদের বানানো সিঁড়ি!

উড়ালসড়কের বিভাজক ঘেঁষে একটির ওপর আরেকটি স্ল্যাব বসিয়ে এভাবেই সিঁড়ি বানিয়েছেন পথচারীরা l প্রথম আলো
উড়ালসড়কের বিভাজক ঘেঁষে একটির ওপর আরেকটি স্ল্যাব বসিয়ে এভাবেই সিঁড়ি বানিয়েছেন পথচারীরা l প্রথম আলো

গুলিস্তান-যাত্রাবাড়ী মেয়র হানিফ উড়ালসড়কের চওড়া বিভাজক পেরিয়ে অপর পাশে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন স্থানে নিজেরাই সিঁড়ি বানিয়েছেন পথচারীরা। এক পাশের ব্যস্ত সড়ক পেরিয়ে এই সিঁড়ি দিয়ে বিভাজকে ওঠেন পথচারী। তারপর অপর পাশের সিঁড়ির সাহায্যে আবারও ব্যস্ত সড়কে নামেন তাঁরা।
স্থানীয় দোকানিরা জানিয়েছেন, পথ সংক্ষেপ করে যাতায়াতের জন্য পথচারীরা এই ব্যবস্থা করেছেন। তবে এতে যেকোনো সময় তাঁরা বড় দুর্ঘটনায় পড়তে পারেন।
গত শনিবার দুপুরে উড়ালসড়কসংলগ্ন ওয়ারী ফোল্ডার স্ট্রিট, স্বামীবাগ, সায়েদাবাদ ও আশপাশের এলাকা ঘুরে এ ধরনের বেশ কিছু সিঁড়ি দেখা যায়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, একটি ভাঙা স্ল্যাবের ওপর দু-তিনটি ভাঙা স্ল্যাব বসিয়ে সিঁড়িগুলো বানানো হয়।
দুপুর ১২টা থেকে প্রায় ১৫ মিনিট ফোল্ডার স্ট্রিটের আরএফএল বিক্রয়কেন্দ্রের কাছে দাঁড়িয়ে দেখা যায়, এ সময়ের মধ্যে উড়ালসড়কের বিভাজকের নিচে পাতা সিঁড়ি এবং বিপরীত দিকে ফকিরবানু ভবন প্রান্তের সিঁড়ি বেয়ে অন্তত ২০ জন লোক চলাচল করেছেন। এ সময়ে দুই প্রান্তের সড়কে কমপক্ষে ৫০টি যান চলাচল করেছে। ওই স্থান থেকে একদিকে জয়কালী মন্দির সড়ক এলাকায়, অন্যদিকে ওয়ারী উচ্চবিদ্যালয় প্রান্তে বিভাজকের মাঝ দিয়ে চলাচলের দুটি সরু পথ রয়েছে। সেগুলোতে লোক চলাচল খুব কম।

হাটখোলা রোডে ফকিরবানু ভবনের পাশে একটি টায়ারের দোকানের ব্যবস্থাপক আবদুর রহমান বলেন, একটু ঘুরে যাতায়াতের আলসেমিতে পথচারীরা ঝুঁকি নিয়ে এভাবে রাস্তা পেরোন। মাঝে মাঝে দুর্ঘটনাও ঘটে।

বিপরীত দিকে ‘হট কেক’ দোকানের কর্মচারী রতন এ বিষয়ে যে মন্তব্য করলেন, তার অর্থ হচ্ছে, অনেকেই এভাবে চলাচলের সমালোচনা করেন, কিন্তু নিজেরা চলতে গিয়ে ওই সিঁড়ি ব্যবহার করেন। 

কিছু দূরে সালাউদ্দিন স্পেশালাইজড হাসপাতালের কাছে চলাচলের জন্য বিভাজকের মাঝখানে চওড়া রাস্তা রয়েছে। কিন্তু সেই পথে পথচারী চাইলেই চলাচল করতে পারছেন না। কারণ, সেখানে রিকশা বা যানবাহন চলাচল রোধ করার জন্য স্থানীয় পুলিশ বক্স থেকে সড়কে আড়াআড়িভাবে মোটরসাইকেল রেখে অস্থায়ীভাবে সড়ক প্রতিরোধ করা হয়ে থাকে। কর্তব্যরত একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, দুর্ঘটনা এড়াতে রাস্তায় এই সীমানা। 

রাজধানী সুপার মার্কেট থেকে পূর্ব পাড়ে যাওয়ার জন্যও বিভাজকের নিচে সিঁড়ি পাতা হয়েছে। একই ধরনের সিঁড়ি দেখা যায় কে এম দাস লেন প্রান্ত, স্বামীবাগ মিতালী বিদ্যাপীঠ, সায়েদাবাদ শিশুপার্ক এলাকায়।

এলাকাটি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৫ নম্বর আঞ্চলিক কার্যালয়ের অধীনে। যোগাযোগ করা হলে প্রকৌশল বিভাগ থেকে বলা হয়, নিচের রাস্তার তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব করপোরেশনের হাতে থাকলেও উড়ালসড়কের ওপর ও বিভাজকের ওপর কিছু করা তাদের আওতার বাইরে।