রাস্তায় গাড়ির চাপ, চেকপোস্টে হিমশিম অবস্থা পুলিশের

করোনাভাইরাসের উচ্চ সংক্রমণ রোধে সারা দেশে চলা কঠোর লকডাউনের মধ্যেও রাজধানীতে আজ ছিল যানবাহনের চাপ। তেজগাঁও, ৩ আগস্ট।
ছবি: দীপু মালাকার

রাজধানীর মহাখালী রেলগেট এলাকা থেকে মোটরসাইকেলচালক মো. রবিন (৩০) একজন যাত্রী নিয়ে বাংলামোটর যাচ্ছিলেন। বিজয় সরণি মোড়ে ট্রাফিক পুলিশ পেছনের আরোহী সম্পর্কে রবিনকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, যাত্রী তাঁর অফিসের সহকর্মী। তাঁরা কোথায় কাজ করেন এবং পেছনের যাত্রীর নাম জানতে চাইলে কোনো জবাব দিতে পারেননি তিনি। একপর্যায়ে স্বীকার করেন ভাড়ার তিনি যাত্রী পরিবহন করছিলেন। ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট রইসুল ইসলাম তাঁকে এক হাজার টাকা জরিমানা করেন।

শুধু রবিন নন, বিধিনিষেধের ১২তম দিন আজ মঙ্গলবার ঢাকা মহানগরীতে ব্যক্তিগত মোটরসাইকেল এবং সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে অনেকেই যাত্রী পরিবহন করছেন। ট্রাফিক পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হলে তাঁরা নানা ধরনের অজুহাত দিচ্ছেন। অন্যান্য দিনের তুলনায় নগরীতে ব্যক্তিগত গাড়ি, বিভিন্ন সরকারি–বেসরকারি অফিসের গাড়ি, পণ্যবাহী গাড়ির চাপ অনেক বেড়েছে বলে জানিয়েছেন মাঠপর্যায়ে দায়িত্বপালনকারী ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা। এ কারণে সকাল থেকে অনেক গাড়িকে সিগন্যালেও আটকে থাকতে হচ্ছে। নগরীতে পুলিশের চেকপোস্টও কমে গেছে।

বিজয় সরণিতে দায়িত্ব পালনকারী সার্জেন্ট রইসুল ইসলাম বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, আজ সকাল থেকেই রাস্তায় গাড়ির প্রচণ্ড চাপ। অনেকে গাড়ি নিয়ে বের হয়ে যাত্রী পরিবহন করছেন। বিশেষ করে সিএনজিচালিত অটোরিকশা এবং মোটরসাইকেলে যাত্রী পরিবহন অনেক বেড়েছে। এখন পর্যন্ত সরকারি আদেশ অমান্য করার অভিযোগে তিনজনকে জরিমানা করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি মোটরসাইকেলচালককে ১ হাজার টাকা এবং সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালককে ১ হাজার ২০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তাঁরা যাত্রী পরিবহন করার পাশাপাশি মিথ্যা তথ্য দিয়েছিলেন।

মাঠে দায়িত্বপালনকারী একাধিক ট্রাফিক পুলিশ সদস্য জানান, রাস্তায় গাড়ির চাপ বাড়ার কারণে তাঁদের দায়িত্ব পালন করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ঘর থেকে হওয়া অধিকাংশ মানুষকেই তাঁরা জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারছেন না। বিধিনিষেধ মানতে অনেকেই অপারগতা দেখাচ্ছেন।

তেজগাঁও এলাকায় দায়িত্ব পালনকারী ট্রাফিক সার্জেন্ট রফিকুল ইসলাম বেলা ১১টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, গতকালের তুলনায় আজ ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ গাড়ির চাপ বেড়েছে। সকাল ১০টা পর্যন্ত অফিসগামী গাড়ির চাপ বেশি ছিল। এখন চাপ সকালের তুলনায় সামান্য কমলেও অন্যান্য দিনের তুলনায় অনেক বেশি। সিগন্যালে গাড়িগুলোকে এক থেকে দুই মিনিট পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে।

এদিকে আজ সকালে রাজধানীর বনানী, মহাখালী, তেজগাঁও, মগবাজার, ফার্মগেট, বিজয় সরণি এবং জাহাঙ্গীর গেট এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, রাস্তায় মানুষ অন্যান্য দিনের তুলনায় বেশি বের হলেও তল্লাশি কার্যক্রম চলছে ঢিলেঢালা।

করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে গত ১ থেকে ৭ জুলাই কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার। পরে তা বাড়িয়ে ১৪ জুলাই পর্যন্ত করা হয়। ঈদুল আজহার কারণে ১৫ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়। পরে ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত কঠোরতম বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।