শাহজালাল বিমানবন্দরের সেবা নিয়ে অসন্তোষ সালমান এফ রহমানের

শাহজালাল বিমানবন্দরে পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানছবি: আহমেদ দীপ্ত

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের যাত্রীসেবার মান প্রসঙ্গে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান (সালমান এফ রহমান)। তিনি বলেছেন, ‘আমি ওভারঅল স্যাটিসফাইড নই। এখানে পরিস্থিতি উন্নত করার অনেক সুযোগ আছে। সেসব সুযোগের কথা আমি সংশ্লিষ্টদের বলে দিয়েছি। মাঠপর্যায়ে যাঁরা আছেন, তাঁদের মনমানসিকতা বদলাতে হবে।’

আজ সোমবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে শাহজালাল বিমানবন্দরে এসে অকস্মাৎ পরিদর্শন করেন সালমান এফ রহমান। পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে বিমানবন্দরের নানা সেবা প্রসঙ্গে কথা বলেন। এ সময় বিমানবন্দরের সার্বিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে আপনি সন্তুষ্ট কি না, সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

বিমানবন্দর ব্যবস্থাপনার লোকবল দিয়ে যাত্রী ভোগান্তি কমানো যাচ্ছে না, এটি ঠিক করতে তৃতীয় পক্ষকে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে যুক্ত করা হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে সালমান এফ রহমান বলেন, ‘মোটামুটি একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে তৃতীয় টার্মিনালে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং, লাগেজ হ্যান্ডলিং, স্ক্যানার এসব ব্যবস্থাপনা, এসব কাজে আউটসোর্সিং করা হবে। এগুলো আউটসোর্স করার চিন্তা আছে।’

বিমানবন্দরের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সার্ভিস তৃতীয় পক্ষের কাছে এখনই দেওয়া হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে সালমান এফ রহমান বলেন, এখনই তা করা সম্ভব নয়। কারণ, এই প্রক্রিয়া শেষ করতে যে সময় লাগবে, তত দিনে তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ হয়ে যাবে। এখন যা অবস্থা সেটাকে উন্নত করাই লক্ষ্য।

সালমান এফ রহমান বলেন, ‘সরকার খুব সিরিয়াসলি এ বিষয়টি নিয়েছে। এ পরিদর্শনের পর যদি আমরা দেখি যে অভিযোগের হারটা কমছে না, কনটিনিউ করছে, তাহলে আমরা আরও কঠিন ব্যবস্থায় যাব। প্রক্রিয়াটা আমরা আজকে শুরু করেছি।’

কাস্টমসে যাত্রীদের হয়রানি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যাত্রীরা নিয়ম অনুযায়ী স্বর্ণ আনছে দেশে। তবে শুল্কযোগ্য পণ্যের টাকা পরিশোধের জন্য ব্যাংক কাস্টমস থেকে একটু দূরে হওয়ায় যাত্রীদের অসুবিধা হয়। এ জন্য ব্যাংক ও কাস্টমস পাশাপাশি রাখার নির্দেশনা দেন তিনি।

সালমান এফ রহমান বলেন, ‘শাহজালাল বিমানবন্দরে যাত্রীদের নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। এমন খবর পেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে এই বিমানবন্দর পরিদর্শনে পাঠিয়েছেন। আমি যেটা দেখেছি, দুই–তিনটা জায়গায় হয়রানি হয়। এর মধ্যে একটা ইমিগ্রেশনে করোনা সার্টিফিকেট জমা দেওয়ার বড় লাইন। এখন অধিকাংশ মানুষ কিউআর কোড নিয়ে আসছেন। তাঁরা সহজেই ইমিগ্রেশন পার হতে পারছেন।’

সালমান রহমান বলেন, আরেকটা অভিযোগ শুনেছিলাম ইমিগ্রেশনে হয়রানি হয়। অনেকে বলেছেন ইমিগ্রেশন পার হতে অনেকের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়, অপ্রয়োজনীয় প্রশ্ন করা হয়। এসব হয়রানির অভিযোগ জানাতে যাত্রীদের জন্য একটি অ্যাপ তৈরি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, বিমানবন্দরে দেশের ইমেজটা ফুটে ওঠে।

বিমানবন্দরের অভিজ্ঞতা যদি খারাপ থাকে তাহলে শুরুতেই দেশ সম্পর্কে একটা খারাপ অভিজ্ঞতা হয়। এটা যেন না হয়। বিষয়টা নিয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব তোফাজ্জেল হোসেন, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) সদস্য (পরিকল্পনা ও পরিচালনা) এয়ার কমোডর সাদিকুর রহমান চৌধুরী, সদস্য (নিরাপত্তা) গ্রুপ ক্যাপ্টেন আবু সালেহ মাহমুদ মান্নাফী, হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রপ ক্যাপ্টেন মো. কামরুল ইসলাম, পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) প্রধান মনিরুল ইসলাম প্রমুখ।