সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনায় বিচারহীনতার সংস্কৃতি দায়ী: বদিউল আলম
বিচারহীনতা, পরস্পরের ওপর দোষারোপ ও পক্ষপাতমূলক আচরণের সংস্কৃতির কারণে দেশে বারবার সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। গত ১০ দিনের ঘটনায় এটাই স্পষ্ট বলে মন্তব্য করেছেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার।
আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বন্ধ ও দোষী ব্যক্তিদের বিচারের দাবিতে সুজন, জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম, বিকশিত নারী নেটওয়ার্ক ও ইয়ুথ এন্ডিং হাঙ্গার আয়োজিত মানববন্ধনে বদিউল আলম মজুমদার এসব মন্তব্য করেন।
সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনায় বিচারহীনতার সংস্কৃতিকে দায়ী করে সুজনের সম্পাদক বলেন, ‘অতীতে এ ধরনের ঘটনায় যে অন্যায়–অবিচার হয়েছে, তার বিচার হয়নি। শুধু তা–ই নয়, আরও অনেক ক্ষেত্রে অন্যায়-অসংগতি হয়, তার বিচার হয় না। আবার আমরা দেখি, একটা ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের রাজনীতিবিদেরা একে অপরকে দোষারোপ করেন। আমাদের প্রশাসন ও সরকার–সমর্থক কিছু কিছু নেতা হামলার ঘটনায় পক্ষপাতমূলক আচরণ করছেন।’
সুজনের সম্পাদক বলেন, ‘গত কয়েক দিনে দেশে যে তাণ্ডব হয়েছে, সেখানে আমাদের তরুণেরা সামনে ছিল। তারা এসব ঘটনা ঘটিয়েছে। এতে বোঝা যায়, আমাদের তরুণেরা উচ্ছন্নে যাওয়া শুরু করেছে। তরুণদের সঠিক পথে আনতে আজ আমাদের জাতীয় কর্মসূচি দেওয়া দরকার, যাতে তারা এসব অন্যায়–অপকর্ম থেকে দূরে থাকে।’
বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘এই যে অপসংস্কৃতি ও অপকর্ম শুরু হয়েছে, তার বিরুদ্ধে আমাদের সবার অবস্থান নেওয়া দরকার। এ ধরনের ঘটনা বন্ধে আমাদের মধ্যে শ্রদ্ধাবোধ সৃষ্টি করা দরকার।’ সমাজ ও আন্তধর্মে সম্প্রীতি সৃষ্টি করা দরকার বলেও মনে করেন তিনি।
সুজনের সম্পাদক আরও বলেন, ‘আপনারা জানেন, কয়েক বছর আগে চট্টগ্রামে পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতু হত্যায় কী ঘটেছিল। এ ঘটনায় রোজার দিনে অনেক মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। কী অজুহাত, তারা মিতুকে হত্যা করেছে। তারা বলেছিল, মিতুকে হত্যা করেছে মৌলবাদী ও উগ্রবাদীরা। কারণ, বাবুল আক্তার তাদের বিরুদ্ধে অনেক অভিযান পরিচালনা করেছে। এখন আমরা দেখতে পাচ্ছি, শর্ষের মধ্যেই ভূত। এই যে অন্যায় আচরণ, কত মানুষের জীবন-জীবিকা এতে নষ্ট হয়েছে। মানুষ হয়রানির শিকার হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত হয়নি, বিচার হয়নি, কাউকে দায়ী করা হয়নি।’
মানববন্ধনে সহিংসতার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন, দোষী ব্যক্তিদের বিচারিক প্রক্রিয়ায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিসহ ১৫ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। দেশের বিভিন্ন এলাকায় এ মানববন্ধন করা হয়। তবে দু-একটি এলাকায় মানববন্ধনে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা বাধা দিয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়।
মানববন্ধনে সমাপনী বক্তব্য দেন সুজনের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি হামিদা হোসেন। আরও বক্তব্য দেন জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সম্পাদক নাছিমা আক্তার, সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার প্রমুখ।