ফ্যাশন কোম্পানির আত্মসাৎ করা অর্থ ফেরতের দাবিতে অস্ট্রেলীয় হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ
অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক ফ্যাশন কোম্পানি মোজাইক ব্র্যান্ডস লিমিটেড কর্তৃক আত্মসাৎকৃত অর্থ ফেরত দেওয়াসহ পাঁচ দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত ২২ কারখানার শ্রমিক ও প্রতিনিধিরা। গতকাল শনিবার রাজধানীর গুলশানে অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনের সামনে তাঁরা সমাবেশ করেন। সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে হাইকমিশনের এক কর্মকর্তার কাছে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়।
দাবিগুলোর মধ্যে আরও রয়েছে মোজাইক ব্র্যান্ডসের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও দেউলিয়া অবস্থায় ব্যবসা পরিচালনার জন্য ফৌজদারি তদন্ত শুরু করা, আত্মসাৎকৃত অর্থ ফেরত আনার জন্য প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়া, জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারণার জন্য আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া এবং অস্ট্রেলিয়ার সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিক ও ২২টি কারখানাকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া। বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব খবর জানিয়েছে।
সমাবেশে গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার বলেন, অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশের বন্ধুত্ব দীর্ঘদিনের। বাংলাদেশের শ্রমিকেরা আশা করেন, শ্রমিকদের পাওনা ও জীবন-জীবিকা নিশ্চিতে এবং ২২ কারখানা রক্ষায় হাইকমিশনারের মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়া সরকার দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। মোজাইক ব্র্যান্ডসকে আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় এনে শ্রমিক ও ২২ কারখানার পাওনার প্রায় ২৫০ কোটি টাকা দ্রুত ফেরত আনার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
অস্ট্রেলিয়ান কোম্পানি মোজাইক ব্র্যান্ডস লিমিটেডের প্রতারণামূলক ব্যবসার কারণে বাংলাদেশের ২২ কারখানার শ্রমিকদের জীবন ও জীবিকা চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে উল্লেখ করে তাসলিমা আখতার বলেন, তিন বছর ধরে মোজাইক ব্র্যান্ডস তাদের বকেয়া পরিশোধ না করায় জাস অ্যাপারেলস কারখানাটি বন্ধ হয়ে গেছে। পাশাপাশি অন্য কারখানাগুলো মজুরি পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। অবিলম্বে কারখানাগুলোর পাওনা টাকা ফেরত আনতে হবে এবং ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি মোজাইক ব্র্যান্ডসের বিরুদ্ধে ফৌজদারি তদন্ত শুরু করতে হবে।
২২ কারখানার ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সহসভাপতি অঞ্জন দাস, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহিম চৌধুরী, ২২ কারখানার শ্রমিক প্রতিনিধি মইন আহমেদ, নারী শ্রমিক প্রতিনিধি রিবন বেগম প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে পাঁচ দফা দাবির স্মারকলিপি পেশ করেন বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার ও ২২টি গার্মেন্ট কারখানার ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের প্রতিনিধি আবদুল মালেক। অস্ট্রেলিয়ার ডেপুটি হাইকমিশনার স্মারকলিপি গ্রহণ করেন। তিনি শ্রমিকনেতাদের বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন। তবে এ জন্য জটিল আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে বলে তিনি জানান।