সাত কলেজ ঘিরে সংকট: শিক্ষকদের মানববন্ধন, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ। আজ বুধবার দুপুরেছবি: জাহিদুল করিম

রাজধানীর বড় সাত কলেজ ঘিরে সৃষ্ট সংকট কাটেনি। এই কলেজগুলো নিয়ে প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামোর বিরোধিতা করে আন্দোলন করছেন শিক্ষকেরা। পাঁচ দিনের কর্মসূচি অংশ হিসেবে তাঁরা আজ বুধবার ঢাকার সাত কলেজসহ দেশের সব সরকারি কলেজে মানববন্ধন করছেন।

দুপুরে ঢাকা কলেজে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষকেরা প্রথমে কলেজ আঙিনায় মানববন্ধন করেন। পরে তাঁরা কলেজের মূল ফটকের সামনে মানববন্ধন করেন।

অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ দ্রুত জারির দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন সাত কলেজের অনেক শিক্ষার্থী। তাঁরা মূলত স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থী। তাঁরা আজ প্রথমে ঢাকা কলেজের শহীদ মিনারের সামনে বিক্ষোভ করেন। পরে মিছিল নিয়ে মূল সড়কে আসেন। মিছিলটি সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়ে যায়। ৩০ মিনিটের মতো অবস্থান করে করে। এতে তীব্র যানজট তৈরি হয়। পরে মিছিলটি নিউমার্কেটের দিকে চলে যায়।

শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়ে যায়। ৩০ মিনিটের মতো অবস্থান করে। এতে তীব্র যানজট তৈরি হয়
ছবি: জাহিদুল করিম

আগে থেকেই ঢাকার এই সাত সরকারি কলেজে সংকট বিরাজ করছে। ২০১৭ সালে যথেষ্ট প্রস্তুতি ছাড়াই এগুলোকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়েছিল।

সরকারি এই কলেজগুলো হলো ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা মহিলা কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল কলেজ, সরকারি বাঙলা কলেজ ও তিতুমীর কলেজ। এখন নতুন বিশ্ববিদ্যালয় করা নিয়ে নতুন সংকট তৈরি হয়েছে।

ঢাকার সাতটি সরকারি কলেজ একীভূত করে প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির ‘স্কুলিং মডেল’ বাতিল এবং স্বাতন্ত্র্য কাঠামো অক্ষুণ্ন রেখে একাডেমিক-প্রশাসনিক পদে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করে অধ্যাদেশ জারির দাবিতে গতকাল মঙ্গলবার শিক্ষকদের কর্মসূচি শুরু হয়েছে। চলবে ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

প্রথম দিন গতকাল মাউশি প্রাঙ্গণে গণজমায়েত কর্মসূচি পালন করেন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা। সাত কলেজ স্বাতন্ত্র্য রক্ষা পরিষদের ব্যানারে এ কর্মসূচি হলেও বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা এতে অংশ নেন। আজ তাঁরা সারা দেশের সব সরকারি কলেজে মানববন্ধন করছেন।

ঢাকা কলেজের মূল ফটকের সামনে শিক্ষকদের মানববন্ধন। আজ বুধবার দুপুরে
ছবি: মোশতাক আহমেদ

এ ছাড়া ৪ ডিসেম্বর সাত কলেজে কর্মবিরতি (পরীক্ষা আওতার বাইরে) ও ৬ ডিসেম্বর শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা।

এরপরও দাবি উপেক্ষা করে চূড়ান্ত অধ্যাদেশ জারি করা হলে তাৎক্ষণিকভাবে দেশের সব সরকারি কলেজ ও দপ্তরে অনির্দিষ্টকালের জন্য সর্বাত্মক কর্মবিরতি (টোটাল শাটডাউন) শুরু করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা।

অন্যদিকে উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা প্রস্তাবিত মডেলের বিরুদ্ধে। সব মিলিয়ে তিনটি পক্ষ হয়ে গেছে।