ঘরে দেওয়া হয় তেলাপোকা মারার ওষুধ, অসুস্থ হয়ে স্কুলপড়ুয়া দুই ভাইয়ের মৃত্যু

বাবার সঙ্গে দুই ভাই শাহিল মোবারত জায়ান (৯) ও শায়েন মোবারত জাহিন (১৫); স্কুলপড়ুয়া এই দুই ভাই এখন আর নেই
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি বাসায় তেলাপোকা মারার ওষুধ দেওয়ার পর অসুস্থ হয়ে স্কুলপড়ুয়া দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ ও পারিবারিক সূত্র বলছে, ওই ওষুধের বিষক্রিয়ায় শাহিল মোবারত জায়ান (৯) ও তার বড় ভাই শায়েন মোবারত জাহিনের (১৫) মৃত্যু হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, মোবারক হোসেন (তুষার) ও শারমিন জাহান (লিমা) দম্পতি ওই দুই ছেলে এবং এক মেয়েকে নিয়ে ওই ফ্ল্যাটে থাকতেন। তিন সন্তানের মধ্যে মেয়েটি ছিল মেজ। এই দম্পতি গত শুক্রবার তেলাপোকার উৎপাত থেকে বাঁচতে একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের বাসায় ডেকে আনেন। তাঁরা বাসায় তেলাপোকা মারার ওষুধ স্প্রে করে বলে যান, ছয় ঘণ্টা যেন বাসায় না ঢোকেন। এরপর পুরো বাসা পরিষ্কার করে বসবাস করতে বলেছিলেন তাঁরা। কিন্তু পরিবারটি তা না করে ছয় ঘণ্টা পর বাইরে থেকে বাসায় ফিরে ঘুমিয়ে পড়ে। পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে অসুস্থ হয়ে পড়ে ছোট ছেলে শাহিল মোবারত। এরপর অসুস্থ হয়ে পড়ে তার বড় ভাই শায়েন মোবারত।

গতকাল রোববার ভোরে দুই ভাইকে গুলশানের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা–নিরীক্ষা করে শাহিলকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে শায়েনও মারা যায়। এই দম্পতির অপর সন্তান মেয়েটি সুস্থ আছে।

পারিবারিক সূত্র জানায়, গতকাল ভোরে শাহিলের মৃত্যুর পর চিকিৎসকেরা পরীক্ষা–নিরীক্ষা করে দেখেছেন, ওষুধের বিষক্রিয়ায় দুই ভাইয়ের পাকস্থলীসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ আক্রান্ত হয়েছিল। শায়েন গতকাল বিকেলের দিকে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন তাকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

মোবারক হোসেনের বন্ধু এস এম সেলিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘তেলাপোকা মারার ওষুধের বিষক্রিয়া থেকে দুই ভাই মারা গেছে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ বি এম আসাদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে তেলাপোকা মারার ওষুধ থেকে বিষক্রিয়া হয়ে দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। এরপরও তাদের মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, মোবারক হোসেনের বাড়ি কুমিল্লা জেলার মুরাদনগরে। তিনি ঢাকা রয়েল ক্লাব লিমিটেডের (উত্তরা) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি।