সায়েন্স ল্যাব এলাকার সেই ভবনের তৃতীয় তলায় তিতাসের সংযোগ আছে

রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব এলাকার তিনতলা একটি ভবনে গত রোববার বিস্ফোরণের পর আগুনের ঘটনা ঘটে
ফাইল ছবি

ঢাকার সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকার শিরিন ভবনের তৃতীয় তলায় তিতাস গ্যাস–সংযোগের পাইপ পাওয়া গেছে। সেই সংযোগ লিকেজ হয়ে ওই ভবনের তৃতীয় তলার কোনো একটি স্থানে গ্যাস জমে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে থাকতে পারে মনে করছেন তদন্তসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা । অবশ্য বিস্ফোরণের পর তিতাস গ্যাসের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে বলেছিলেন, ভবনটির নিচতলায় একটি গ্যাসের সংযোগ রয়েছে। দোতলা ও তৃতীয় তলায় কোনো গ্যাস–সংযোগ নেই।

ভবনটির তৃতীয় তলায় থাকা তিতাস গ্যাসের পাইপলাইনের সঙ্গে কোনো চুলার সংযোগ ছিল কি না, সেটা এখনো নিশ্চিত হতে পারেননি তদন্তসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। পাশাপাশি ঘটনার পাঁচ দিন পরও তাঁরা জানতে পারেননি ভবনটি আবাসিক নাকি বাণিজ্যিক।

তবে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) সূত্র বলছে, শিরিন ভবনের কোনো নথি খুঁজে পাওয়া যায়নি।

নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল গণি প্রথম আলোকে বলেন, ভবনটির তিনতলায় তিতাস গ্যাস–সংযোগের পাইপ পাওয়া গেছে। সেই সংযোগ লিকেজ থেকে গ্যাস জমে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে কি না, সেটা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

এদিকে ওই ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনায় গত বুধবার বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা হয়েছে। মামলায় আসামি করা হয়েছে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে। পুলিশ বলছে, বিস্ফোরণের ঘটনায় মালিকের নাকি ভাড়াটেদের অবহেলা রয়েছে, সেটা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার শহীদুল্লাহ গতকাল বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে বলেন, বিস্ফোরণের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে।

গত রোববার রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকার তিনতলা ভবনের তৃতীয় তলায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সেখানে তিনজনের মৃত্যু হয়। আহত হন অন্তত ১৫ জন। এর দুই দিন পর পুরান ঢাকার সিদ্দিকবাজার এলাকার একটি সাততলা ভবনে ভয়াবহ বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় ২৩ জনের।  

তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, বিস্ফোরণের ঘটনায় সরকারি কোনো সংস্থার গাফিলতি রয়েছে কি না, সেটা জানতে ফায়ার সার্ভিস, বিস্ফোরক অধিদপ্তর, পুলিশের বোমা নিস্ক্রিয়করণ দল, তিতাস ও বিদ্যুৎ বিভাগের মতামত চাওয়া হয়েছে। আদালতের অনুমতি নিয়ে লিখিতভাবে এসব সংস্থার মতামত চেয়েছে পুলিশ।

বিস্ফোরণের ঘটনাটি তদন্ত করছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের বোমা নিস্ক্রিয়করণ দল ও ফায়ার সার্ভিস। পুলিশের বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দলের কর্মকর্তারা প্রথম আলোকে বলেন, ভবনের তিনতলায় বিস্ফোরণ হয়েছে। সেখানে একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় মিথেন গ্যাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। সেই গ্যাস থেকেই বিস্ফোরণ হয়েছে।

গতকাল সরেজমিনে দেখা গেছে, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটির নিরাপত্তায় রয়েছেন কয়েকজন পুলিশ সদস্য। আর মূল ফটকে ঝুলছে তালা। বিস্ফোরণের পর দেয়ালের ইট, জানালার কাচ উড়ে এসে ঢাকা–মিরপুরের মূল সড়ক ও এক পাশের রাস্তায় পড়েছিল, সেগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। যাতে যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন না ঘটে।

ভবনটি কবে নাগাদ মালিককে বুঝিয়ে দেওয়া হবে, জানতে চাইলে ওসি  শফিকুল গণি বলেন, যেহেতু ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ তাই সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো থেকে অনুমতির প্রয়োজন রয়েছে। এ ছাড়া আদালতের নির্দেশনা পাওয়ার পর ভবনটি মালিককে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।