‘এলডিসি থেকে উত্তরণে এখন থেকেই নারীদের প্রস্তুতি নিতে হবে’
জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) বাংলাদেশের কান্ট্রি ইকোনমিস্ট নাজনীন আহমেদ বলেছেন, ২০২৬ সালে বাংলাদেশ চূড়ান্তভাবে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বের হয়ে আসবে। কিন্তু এর মানে রাতারাতি গ্রামগুলো শহর হয়ে যাবে না। এর জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। তখন বাংলাদেশে প্রচুর পরিমাণে বিদেশি বিনিয়োগ আসতে শুরু করবে। শহরের বাসিন্দারা হয়তো এটার সুযোগ বেশি নিতে পারবে। এ ক্ষেত্রে নারীদের, বিশেষ করে গ্রামীণ নারীদের এখন থেকেই প্রস্তুত করতে হবে।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন অর্থনীতিবিদ নাজনীন আহমেদ। আজ সোমবার সকালে রাজধানীর দ্য ডেইলি স্টার সেন্টারে অনুষ্ঠিত ‘তৃণমূল পর্যায়ে নারীর ক্ষমতায়নে চ্যাম্পিয়নদের সাফল্য উদ্যাপন: চ্যালেঞ্জ, সুযোগ এবং এগিয়ে যাওয়ার পথ’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ট্রেডক্রাফট এক্সচেঞ্জ। সভায় নাজনীন আহমেদের সঙ্গে মূল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রোগ্রাম ম্যানেজার লায়লা জেসমিন বানু।
নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে নাজনীন আহমেদ বলেন, ‘অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি আমাদের আচরণেও পরিবর্তন আনতে হবে। প্রতিটি পরিবারে নারীর প্রতি সহনশীল হওয়ার চর্চা করতে হবে।’
নারীর জন্য টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পরিবারকেন্দ্রিক পদ্ধতি অনুসরণ করার বিষয়ে জোর দেন শাহীন আনাম। তিনি বলেন, ‘আমাদের সমাজের নারীদের কাজের মূল্য উপলব্ধি করা হয় না। কিন্তু পুরুষ ও নারী উভয়ই একই ধরনের দায়িত্ব পালনে সক্ষম। কিন্তু তথাকথিত সমাজব্যবস্থায় পুরুষদের পরিবারপ্রধান হিসেবে গণ্য করা হয়। এতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ন্ত্রণ পুরুষের হাতে থাকে। এই অবস্থার পরিবর্তন দরকার।’
এর আগে অনুষ্ঠানের শুরুতে আমন্ত্রিত অতিথি ও বক্তাদের স্বাগত জানান ট্রেডক্রাফট এক্সচেঞ্জের কান্ট্রি ডিরেক্টর শাহেদ ফেরদৌস। এ আলোচনা সভায় দেশি-বিদেশি বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা অংশ নেন। এ ছাড়া আলোচনা সভায় ট্রেডক্রাফট এক্সচেঞ্জের ‘উই’ প্রকল্পের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হওয়া যশোর, খুলনা, ফরিদপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়ের প্রত্যন্ত এলাকার পাঁচজন নারীর সাফল্যের গল্প তুলে ধরা হয়।