সংখ্যালঘু হত্যার সংখ্যা নিয়ে এবার ভিন্ন কথা বলল হিন্দু মহাজোট

রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সংবাদ সম্মেলন করে জাতীয় হিন্দু মহাজোট
ছবি: সংগৃহীত

ভুল তথ্য ও বিশদ বিবরণের অভাবে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নির্যাতনের ওপর প্রকাশিত প্রতিবেদন নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্নের সৃষ্টি হওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট।

সংগঠনটি বলছে, ২০২২ সালে সারা দেশে জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের যে ১৫৪ জন নিহতের ঘটনা ঘটেছে, তা শুধু সাম্প্রদায়িক সহিংসতার কারণে নয়, জমি-জমার বিরোধ, অর্থনৈতিক ও ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব, রাজনৈতিক সংঘাতসহ নানা কারণে হয়েছে। সেই সঙ্গে যে পরিমাণ জমি বেদখলের তথ্য উল্লেখ করা হয়েছিল, সেখানেও টাইপিং ভুল ছিল।

আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক।

এর আগে ৬ জানুয়ারি ডিআরইউতে এক সংবাদ সম্মেলনে হিন্দু মহাজোট জানায়, ২০২২ সালে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ১৫৪ জনকে হত্যা করা হয়েছে। আর তাঁদের ৮৯ হাজার ৯৯০ একর জমি দখল করা হয়েছে।

এ সংবাদ সম্মেলনে গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক বলেন, ‘অনিচ্ছাকৃত ভুলবশত প্রতিবেদনের শুরুতে দেশে গত বছর ১৫৪ জন সংখ্যালঘুকে হত্যা করা হয় বলে উল্লেখ করা হয়। মূলত আমরা বলতে চেয়েছি, ২০২২ সালে বিভিন্ন কারণে ১৫৪ জন সংখ্যালঘু নিহত হন। এসব নিহতের ঘটনার সবগুলো সাম্প্রদায়িক সহিংসতার সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। বরং বেশ কিছু ক্ষেত্রে জমি-জমার বিরোধ, অর্থনৈতিক ও ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব, পূর্বশত্রুতার ঘটনা, স্থানীয় দ্বন্দ্ব ও কলহ, রাজনৈতিক সংঘাত এবং দৈনন্দিন জীবনের ঘটনাবলির কারণে সংঘটিত হয়েছে। অনিচ্ছাকৃত ভুল এবং তৎপরবর্তী বিশদ বিবরণের অভাবে খুব সহজে ১৫৪ জন নিহতের বিষয়টি অতি সরলীকরণ করা হয়েছে। এ জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।’

নিহতের পাশাপাশি হত্যার হুমকি, হত্যাচেষ্টা, চাঁদাবাজি, বসতবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা, অগ্নিসংযোগ, উচ্ছেদ, অপহরণ, ধর্ষণ, চাকরিচ্যুতি, জেল-জরিমানাসহ যে বিষয়গুলো প্রতিবেদন আকারে পেশ করা হয়েছে, তা শুধু সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষের কারণে সংঘটিত হয়নি; বিভিন্ন কারণে ঘটেছে বলেও উল্লেখ করেন গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক। তিনি বলেন, প্রতিবেদনে নির্যাতনের কিছু চিত্র তুলে ধরার পাশাপাশি সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা প্রতিরোধে সরকারের দৃঢ় ভূমিকার কথাও তুলে ধরা হয়েছিল। প্রতিবেদনে পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করা হয়, বিগত বছরগুলোর তুলনায় ২০২২ সালে সরকার ও প্রশাসনের সদিচ্ছার কারণে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা অনেকাংশেই হ্রাস পায়।

৮৯ হাজার একর জমি বেদখলের তথ্য ভুল উল্লেখ করে মুঠোফোনে গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আসল সংখ্যা হবে গত এক বছরে সংখ্যালঘুদের প্রায় ৮ হাজার ৯৯০ একর জমি বেদখল হয়েছে। টাইপে ভুল হয়ে ৮৯ হাজার একর হয়ে গিয়েছিল। আমরা সংশোধন করে পাঠাতে পারিনি, অনেক পত্রিকায় এটা ছেপেছিল।’

আরও পড়ুন