অসুস্থ স্বজনদের দেখাসহ জরুরি প্রয়োজনে বেরিয়ে বিপাকে কিছু যাত্রী

গাবতলী বাস টার্মিনালে অপেক্ষায় যাত্রী
ছবি: আশরাফুল আলম

অসুস্থ স্বজনদের দেখাসহ জরুরি প্রয়োজনে গ্রামের বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশে আজ রোববার সকালে রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনালে গিয়েছিলেন কিছু যাত্রী। সেখানে গিয়ে তাঁরা দেখেন, পর্যাপ্তসংখ্যক যাত্রীর অভাবে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে তাঁরা বিপাকে পড়েছেন।

সরেজমিন দেখা যায়, গাবতলী বাস টার্মিনালে যাওয়া যাত্রীরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছেন। কিন্তু তাঁরা কোনো বাস পাচ্ছেন না। এমনকি বাস ছাড়বে কি না, তার নিশ্চয়তাও কেউ তাঁদের দিতে পারছেন না।

বিএনপিসহ বিরোধীদের ডাকা চতুর্থ দফার অবরোধের প্রথম দিন আজ। সকাল ছয়টা থেকে এই অবরোধ শুরু হয়েছে। আগামী মঙ্গলবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত অবরোধ চলবে। অবরোধের মধ্যে আজ সকাল ১০টার দিকে গাবতলী আন্তজেলা বাস টার্মিনালে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়।

গাবতলী বাস টার্মিনালে যাত্রীদের উপস্থিতি একেবারে কম দেখা গেছে। পর্যাপ্তসংখ্যক যাত্রী থাকায় বাস ছাড়া সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন বিভিন্ন কোম্পানির প্রতিনিধিরা।

জয়পুরহাটের আদর্শপাড়া যেতে সকাল ৮টার দিকে এই বাস টার্মিনালে আসেন রিমন হোসেন। অসুস্থ বাবাকে দেখতে তিনি জরুরিভাবে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন বলে জানান। তবে সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত তিনি কোনো বাস পাননি।

রাজধানীর নিউমার্কেটের একটি দোকানে কাজ করেন রিমন। থাকেন কামরাঙ্গীরচর এলাকায়। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত কোনো বাস পাইনি।’ কেউ টিকিট বিক্রি করছে না। বাস ছাড়বে কি না, ছাড়লে কখন ছাড়বে, এসব বিষয়ে নিশ্চিত করে কেউ কোনো তথ্য তাঁকে দিতে পারেনি। তিনি একটা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন।

রিমন আরও বলেন, কেউ কেউ তাঁকে বলছেন, দুপুরের পর বাস ছাড়তে পারে। তাই তিনি দুপুর পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন। যদি বাস পান, তবে বাড়ি যাবেন। তা না হলে ঢাকার বাসায় ফিরে যাবেন।

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় থাকা অসুস্থ স্বামীকে দেখতে যেতে চান রাশিদা বেগম। সে জন্য তিনি সকালে গাবতলী বাস টার্মিনালে আসেন।

রাশিদা ঢাকায় রায়েরবাজার বৌবাজার এলাকায় থাকেন। তিনি বাসাবাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করেন। রাশিদা বলেন, গতকাল শনিবার রাতে তিনি খবর পান, তাঁর স্বামী অসুস্থ। তাই সকাল সকাল তিনি গাবতলী আসেন। কিন্তু এসে দেখেন কোনো বাস ছাড়ছে না। এখন বসে আছি। বাস ছাড়লে যাবেন। তা না হলে বাসায় ফিরে যেতে হবে। বিকেলে যাত্রী পেলে বাস ছাড়তে পারে বলে তাঁকে জানানো হয়েছে।

মাগুরায় যেতে গাবতলী বাস টার্মিনালে আসেন পোশাকশ্রমিক আসমা খাতুন। তিনি বলেন, যাত্রী পাওয়া গেলে বেলা দুইটার পর মাগুরা ডিলাক্স ছাড়বে বলে তাঁকে জানানো হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত এই গন্তব্যের তেমন যাত্রী তিনি দেখতে পাননি।

অবরোধের কারণে আজ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত গাবতলী টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যায়নি বলে জানিয়েছেন পরিবহনসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

টিকিট বিক্রির প্রায় সব কাউন্টার বন্ধ দেখা গেছে। দু-একটি কাউন্টার খোলা থাকলেও কর্মীদের অলস বসে থাকতে দেখা যায়। কোনো কোনো কাউন্টারের কর্মীরা ধোয়ামোছার কাজ করছিলেন।