তিন শতাধিক তরুণের অংশগ্রহণে যুব উৎসব অনুষ্ঠিত

ব্র্যাক আয়োজিত ইয়ুথ ফেস্টিভ্যালের (যুব উৎসব) অংশগ্রহণকারীরা
ছবি: ব্র্যাকের সৌজন্যে

দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা তিন শতাধিক তরুণের পদচারণে মুখরিত হয়ে উঠেছিল কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণ। আজ রোববার রাজধানীতে তাঁরা এসেছিলেন ইয়ুথ ফেস্টিভ্যালের (যুব উৎসব) যোগ দিতে।

ব্র্যাকের সামাজিক ক্ষমতায়ন ও আইনি সুরক্ষা কর্মসূচির (সেলপ) নেতৃত্বে পরিচালিত ‘অধিকার এখানে, এখনই’ প্রকল্পের উদ্যোগে এই আয়োজনে বাল্যবিবাহ, লৈঙ্গিক নিপীড়ন, যৌন ও প্রজননস্বাস্থ্য অধিকার এবং লিঙ্গসমতার মতো বিষয়ে নানা আলোচনায় যোগ দেন তরুণেরা। ব্র্যাকের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।  

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ব্র্যাকের ঊর্ধ্বতন পরিচালক, পিপল, কালচার অ্যান্ড কমিউনিকেশনস, মৌটুসী কবীর বলেন, ‘আমরা যে শিক্ষা বা সামাজিক পরিবেশে বড় হই, সেখানে প্রশ্ন করার অধিকার সম্পর্কে আমাদের সেভাবে জানানো হয় না। বিশেষত যখন যৌনবিষয়ক বা প্রজননবিষয়ক প্রশ্ন থাকে। যেকোনো তরুণ–তরুণীর মনে এ বিষয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে। কিন্তু সামাজিকভাবে এই প্রশ্নগুলোকে দাবিয়ে রাখা হয়। হয়তো বলা হয়, এগুলো লজ্জার বিষয়। এগুলো আলাপ করা যাবে না।’

বাংলাদেশে নিযুক্ত নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের হিউম্যান রাইটস, হিউম্যানিটেরিয়ান অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড জেন্ডারবিষয়ক ফার্স্ট সেক্রেটারি ইয়ান সুইলেন্স এই অনুষ্ঠানের তাৎপর্য তুলে ধরে বলেন, সামাজিক পরিবর্তন ও লৈঙ্গিক ন্যায়বিচার নিশ্চিতে তরুণেরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে একটি শক্তিশালী হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। তিনি বলেন, ‘এখনকার পৃথিবী শুধু একটা সীমান্ত দিয়ে সীমাবদ্ধ নয়, আমরা এখন বৈশ্বিক নাগরিক। অর্থাৎ আমাদের যেকোনো আইডিয়া, যেকোনো উদ্যোগ, শুধু একটি নির্দিষ্ট দেশের জন্যই নয়, সেটি পরিবর্তন আনতে পারে সারা বিশ্বে।’

দিনব্যাপী এই আয়োজনে ‘সমন্বিত যৌন শিক্ষার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা, সাফল্য ও চ্যালেঞ্জ এবং আগামী দিনে আমাদের করণীয়’ শীর্ষক একটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় সরকার, বেসরকারি সংস্থা, যৌন-প্রজনন স্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞ এবং একজন তরুণ স্বেচ্ছাসেবক এতে অংশ নেন।

পরে অবয়ব-এর নির্বাহী পরিচালক, নাজিয়া জেবিন এবং ব্র্যাকের সামাজিক ক্ষমতায়ন ও আইনি সুরক্ষা কর্মসূচির (সেলপ) প্রধান ও ইনচার্জ শাশ্বতী বিপ্লবের পরিচালনায় ‘আন্ডারস্ট্যান্ডিং জেন্ডার, ফেমিনিজম অ্যান্ড কাউন্টারিং ব্যাকলেশেস’ শীর্ষক একটি অধিবেশন পরিচালিত হয়।

প্যানেল আলোচনায় অংশ নিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (ট্রেইনিং-১) মাজহারুল হক মাসুদ বলেন, নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষক, কমিউনিটির সদস্য, বিশেষ করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের টেকসই শিক্ষা ও প্রজননস্বাস্থ্য নিশ্চিতে কাজ করা সুশীল সমাজের সংস্থাগুলোর সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমেই কেবল সম্ভব।

এ ছাড়া প্রখ্যাত শিল্পী ও সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার মোর্শেদ মিশু ছবিতে জেন্ডার সমতা এবং নারীবাদের বিষয়গুলো তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য দেন নারীপক্ষের সভাপতি তাসনিম আজিম।