ঈদযাত্রায় বাসের আগাম টিকিট কিনতে কাউন্টারে ভিড় নেই, বিক্রি হচ্ছে অনলাইনে

রাজধানীর সায়েদাবাদ এলাকায় বাস কাউন্টারগুলোর সামনে আগাম টিকিটপ্রত্যাশীদের ভিড় দেখা যায়নি। ঢাকা, সায়েদাবাদ, ২৮ মার্চছবি: শুভ্রকান্তি দাশ

ঈদযাত্রায় বাসের আগাম টিকিট কিনতে কাউন্টারগুলোয় টিকিটপ্রত্যাশীদের ভিড় নেই। আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল ও কলাবাগান বাসস্ট্যান্ড গিয়ে কাউন্টারগুলোয় যাত্রীদের ভিড় বা সারি দেখা যায়নি।

বিভিন্ন পরিবহন কোম্পানির কর্মীরা বলছেন, যাঁরা বাসের অগ্রিম টিকিট সংগ্রহ করছেন, তাঁরা মূলত অনলাইন থেকেই কিনছেন। টিকিটপ্রত্যাশীরা কাউন্টারে এসে এখনো সেভাবে টিকিট সংগ্রহ করছেন না।

অবশ্য কোনো কোনো বাস কোম্পানির অগ্রিম টিকিট বিক্রি শেষ হয়ে গেছে বলে জানান কর্মীরা।

সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কলাবাগান বাসস্ট্যান্ডে থাকা দূরপাল্লার বিভিন্ন গন্তব্যের কাউন্টারে গিয়ে দেখা যায়, কোম্পানির প্রতিনিধিরা অলস সময় কাটাচ্ছেন। দিনের যাত্রার কিছুসংখ্যক যাত্রী কাউন্টারে বসা। অনেকে আবার আজ রাতের টিকিট কাউন্টারে এসে সংগ্রহ করছেন।

কলাবাগানে গ্রিন লাইন পরিবহনের টিকিট বিক্রয়কর্মী এমরান হোসেন বলেন, দ্বিতীয় রমজান থেকে তাঁদের টিকিট বিক্রি শুরু হয়। দুই দিন আগেই অগ্রিম টিকিট বিক্রি শেষ হয়ে গেছে। ঈদযাত্রার অংশ হিসেবে ৪ থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত সব টিকিট বিক্রি শেষ। বেশির ভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রি হয়েছে।

শ্যামলী এন আর পরিবহনের কাউন্টারে গিয়ে কোনো যাত্রী দেখা যায়নি। দুজন টিকিট বিক্রয় প্রতিনিধি নিজেদের দাপ্তরিক কাজ করছিলেন। কাউন্টার ব্যবস্থাপক রিয়াজ হোসেন বলেন, সকাল থেকে তিনি একটাও অগ্রিম টিকিট বিক্রি করতে পারেননি। তবে অনলাইনে কিছু টিকিট বিক্রি হচ্ছে। গতকাল বুধবার সারা দিনে কাউন্টার থেকে তিনটি টিকিট বিক্রি হয়েছে।

বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে গিয়ে কাউন্টারগুলোয় একই দৃশ্য দেখা যায়। কিছু কাউন্টারে দিনের যাত্রার (রানিং গাড়ি) যাত্রী বসে ছিলেন। কিন্তু কাউকে অগ্রিম টিকিট সংগ্রহের জন্য আসতে দেখা যায়নি।

সায়েদাবাদে হানিফ পরিবহনের ঢাকা-চট্টগ্রাম গন্তব্যের কাউন্টার মাস্টার জাহাঙ্গীর আকিব বলেন, দিনের যাত্রার জন্যও যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না। সকাল থেকে সব গাড়িকে ১৩ থেকে ১৫ জন করে যাত্রী নিয়ে ছাড়তে হয়েছে। তবে অনলাইনে টুকটাক টিকিট বিক্রি হচ্ছে।

এই কাউন্টারের ব্যবস্থাপক আবদুর রাজ্জাক ৩৬ বছর ধরে এই পেশায় আছেন। শুরু থেকেই তিনি হানিফ পরিবহনের সঙ্গে আছেন। তবে এবারের পরিস্থিতি নিয়ে তিনি কিছুটা হতাশ। বললেন, অন্য কোনোবার ঈদের অগ্রিম টিকিটের জন্য এত কম ভিড় থাকতে দেখেননি। তবে আবদুর রাজ্জাক আশা করছেন, ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রি শেষ হয়ে গেলেই বাসের টিকিটের জন্য চাপ বাড়বে।

আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘সবাই এখন অনলাইনে ট্রেনের টিকিটের জন্য চেষ্টা করছেন। যখন ট্রেনের টিকিট পাবেন না, তখন বাসের টিকিটের জন্য আসবেন।’

অগ্রিম টিকিটের জন্য বাস কাউন্টারে কেউ ভিড় করছেন না বলে জানালেন লন্ডন এক্সপ্রেসের কাউন্টার ম্যানেজার আরিফ খান। তিনি বলেন, অনলাইনে সহজ ডটকম, বাস বিডি ও নিজেদের অনলাইন অ্যাপ লন্ডন এক্সপ্রেস ডটকমে টিকিট পাওয়া যাচ্ছে। যাঁরা অগ্রিম টিকিট সংগ্রহ করতে চাইছেন, তাঁরা অনলাইন থেকেই কিনছেন।

ঢাকা-সিলেট গন্তব্যের ৭ এপ্রিল বেলা ১১টার ৪টি অগ্রিম টিকিটের ৩টি অনলাইন থেকে বিক্রি হয়েছে বলে জানান আরিফ খান। একই দিন সন্ধ্যা ৭টা ও দিবাগত রাত সোয়া ১২টার বাসের দুটি করে চারটি অগ্রিম টিকিট বিক্রি হয়েছে, যার সব কটিই অনলাইন থেকে কাটা হয়েছে বলে জানান তিনি।