শুরু হলো সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে চিত্রকর্ম প্রদর্শনী

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির বাইরের প্রাচীরের পুরোটা জুড়ে এমন অসংখ্য ছবি নিয়ে শুরু হয়েছে ‘সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে চিত্র প্রদর্শনী’। ১৫ ডিসেম্বরছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

দারফুর বা রুয়ান্ডা, ইরাক বা ফিলিস্তিন এমন অনেক দেশের নাম উঠে এসেছে এক ব্যানারে। সেই ব্যানারে আছে যুদ্ধবিধ্বস্ত নানা দেশের নাম। বিশ্বের যেসব দেশে গণহত্যার ঘটনা ঘটেছে, সেসব দেশের নাম উল্লেখ করা হয়েছে ব্যানারের চিত্রকর্মের মধ্য দিয়ে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির বাইরের প্রাচীরের পুরোটা জুড়ে এমন অসংখ্য ছবি নিয়ে শুরু হয়েছে ‘সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে চিত্র প্রদর্শনী’।

সাম্রাজ্যবাদবিরোধী শিল্পীসমাজের এই আন্দোলনের মূল বক্তব্য—‘দেশ আমার, সিদ্ধান্ত আমার, নির্ভয়ে চলো বাংলাদেশ।’

শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের পর চিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন মুক্তিযোদ্ধা এবং সাম্রাজ্যবাদবিরোধী শিল্পীসমাজের সঙ্গে সংহতি প্রকাশকারী শিল্পীরা।

মঞ্চে উপস্থিত হন মুক্তিযোদ্ধা, চিত্রশিল্পী, সাম্রাজ্যবাদবিরোধী শিল্পীসমাজের আহ্বায়ক আবুল বারক আলভী; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালের চারুকলা অনুষদের ডিন শিল্পী নিসার হোসেন; অধ্যাপক জামাল আহমেদ ও অধ্যাপক সীতেশ চন্দ্র বাছার।

স্বাক্ষর করে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন মুক্তিযোদ্ধা জহিরউদ্দীন জালাল, তসলিম হেলাল, শামসুদ্দোহা, দেওয়ান কামাল ও আহসানুল হক মিনু। আয়োজনের শুরুতে তাঁদের হাতে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা তুলে দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানের অতিথিরা ঘুরে দেখছেন প্রদর্শনী। ১৫ ডিসেম্বর
ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

শিল্পী নিসার হোসেন বলেন, ‘শিল্পীরা সব সময় নানা প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও নিজেদের অংশগ্রহণ বহাল রাখেন। এর ইতিবাচক ভূমিকার প্রভাব পড়ে। এখন আবার আমরা দেখছি মুক্তিযুদ্ধবিরোধীরা তৎপর হয়েছে। বিশ্বে অপতৎপরতা যারা চালাচ্ছে তারা এখন বাংলাদেশের দিকে নজর দিয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা শিল্পীসমাজকে একসঙ্গে করে তাদের শিল্পকর্ম নিয়ে অশুভশক্তিকে প্রতিহত করতে এ উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা যেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার জায়গাটিকে জলাঞ্জলি না দিই।’

অনুষ্ঠানে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামী লীগ সমর্থিত শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের আহ্বায়ক ও ফার্মেসি অনুষদের ডিন অধ্যাপক সীতেশ চন্দ্র বাছার।

মুক্তিযোদ্ধা, অভিনেতা আহসানুল হক (মিনু) বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের পর আমরা অস্ত্র জমা দিয়েছি, কিন্তু প্রশিক্ষণ জমা দিইনি। দেশ রক্ষার প্রয়োজনে আবার আমরা সংগ্রাম করতে পারি।’ এ সময় তরুণদের জোরালো ভূমিকা রাখতে আহ্বান জানান তিনি।

জহিরউদ্দীন জালালের বক্তব্যেও উঠে আসে মুক্তিযুদ্ধের সময়ের স্মৃতিকথা।
সাম্রাজ্যবাদবিরোধী আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করতে সবাইকে আহ্বান জানান শিল্পী আবুল বারক আলভী।

অনুষ্ঠানের মঞ্চে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা নিয়ে অতিথিরা। ১৫ ডিসেম্বর
ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

উদ্বোধনের পর শুরু হয় সাংস্কৃতিক আয়োজন। পুরো প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন মুক্তিযোদ্ধা ও আয়োজকেরা।

এ চিত্রকর্মের প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে সাম্রাজ্যবাদবিরোধী কার্টুন, হাতে আঁকা ছবি ও কাগজ দিয়ে বানানো হাতে তৈরি শিল্পকর্ম। আগামীকাল ১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত চলবে এ প্রদর্শনী।