পল্লবীতে যুবদল নেতা কিবরিয়া হত্যা মামলায় দুই আসামি রিমান্ডে

বাঁ থেকে গ্রেপ্তার মো . মনির হোসেন ও মো. সুজনছবি: প্রথম আলো

রাজধানীর মিরপুরে দোকানে ঢুকে পল্লবী থানা যুবদলের সদস্যসচিব গোলাম কিবরিয়াকে (৪৭) গুলি করে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় গ্রেপ্তার দুজনের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ ভদ্র আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।

রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া আসামিরা হলেন মো. মনির হোসেন ওরফে সোহেল ওরফে পাতা সোহেল (৩০) ও মো. সুজন ওরফে বুকপোড়া সুজন (৩৫)।

১৮ নভেম্বর রাতে সাভার থানাধীন বিরুলিয়া এলাকা থেকে মো. মনির হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই রাতে জিএমপির টঙ্গী পশ্চিম থানাধীন মাজারবস্তি এলাকা থেকে সুজনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-৪। গ্রেপ্তার দুজনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর র‌্যাব জানিয়েছে, রাজনৈতিক কোন্দল ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়েছে। পাতা সোহেলের বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতিসহ আটটি মামলা রয়েছে। আর সুজনের বিরুদ্ধে ১৮টি মামলা রয়েছে।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জামাল উদ্দিন মার্জিন জানান, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পল্লবী থানার পরিদর্শক মোহাম্মদ হানিফ আসামিদের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। আসামিদের পক্ষে রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করা হয়। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে বিচারক চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

রিমান্ড আবেদনে বলা হয়েছে, আসামিরা পূর্বশত্রুতার জের ধরে পরস্পর যোগসাজশে পিস্তল দিয়ে গুলি করে গোলাম কিবরিয়াকে হত্যা করেছে। মামলার ঘটনার সঙ্গে আসামিরা জড়িত থাকার বিষয়ে সাক্ষ্যপ্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। মামলার মূল রহস্য উদ্‌ঘাটন, সহযোগী আসামিদের শনাক্ত, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার, আসামিদের নাম–ঠিকানা সংগ্রহ করার জন্য তাঁদের সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা দরকার।

হত্যার ঘটনায় ১৮ নভেম্বর রাজধানীর পল্লবী থানায় পাঁচজনকে এজাহারনামীয় এবং সাত–আটজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে হত্যা মামলা করেন নিহতের স্ত্রী সাবিহা আক্তার দিনা।

আরও পড়ুন

মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, গোলাম কিবরিয়া প্রায়ই পল্লবী থানার বিক্রমপুর হার্ডওয়্যার অ্যান্ড স্যানিটারি দোকানে বসে তাঁর বন্ধু মাসুদ রানার সঙ্গে কথা বলতেন। সোমবার সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে সেখানে ঢুকে তাঁকে গুলি করেন জনি ভূঁইয়া, সোহাগ কালু ও রোকন। হত্যার পরিকল্পনা ও নির্দেশনা দেন সোহেল ও মাসুম।

আসামিরা কিবরিয়ার চোয়ালে, গলায়, বাঁ কানে, ঘাড়ে, বুকেসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি গুলি করেন। গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। হত্যার পর পালানোর চেষ্টার সময় স্থানীয় লোকজন জনিকে আটক করেন। অন্য আসামিরা দ্রুত পালিয়ে যান।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া দোকানের সিসিটিভি (ক্লোজড সার্কিট) ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, কিবরিয়া দোকানে ঢোকার দুই-তিন সেকেন্ডের মধ্যে কয়েকজন দুর্বৃত্ত সেখানে ঢুকে তাঁকে গুলি করতে শুরু করে। দুর্বৃত্তদের একজনের পরনে পাঞ্জাবি ও দুজনের গায়ে শার্ট ছিল। প্রত্যেকের মাথায় হেলমেট ও মুখোশ পরা ছিল।

আরও পড়ুন