বইমেলায় স্টলভাড়া ১০ হাজারের মধ্যে রাখার দাবি প্রকাশক পরিষদের

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পাঠক প্রকাশক পরিষদের আহ্বায়ক রবিন আহসান
ছবি: প্রথম আলো

সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক মন্দায় ইতিমধ্যে কয়েক দফায় কাগজের দাম বেড়েছে। কাগজ ছাড়াও প্লেট, ছাপা, বাঁধাই প্রভৃতির মূল্যও বৃদ্ধি পেয়েছে। এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে গভীর সংকটে পড়েছে দেশের মুদ্রণ ও প্রকাশনাশিল্প। এ অবস্থায় আসন্ন একুশে বইমেলায় স্টলভাড়া সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা করার দাবি জানিয়েছেন প্রকাশকেরা।

আজ শনিবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানায় বাংলাদেশ লেখক পাঠক প্রকাশক পরিষদ। রাজধানীর কাঁটাবনে পাঠক সমাবেশে ‘কাগজের মূল্যবৃদ্ধি ও সংকটে প্রকাশনাশিল্প: একুশে বইমেলা ২০২৩ নিয়ে আমাদের প্রস্তাবনা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন করে পরিষদ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন বাংলাদেশ লেখক পাঠক প্রকাশক পরিষদের আহ্বায়ক ও শ্রাবণ প্রকাশনীর প্রকাশক রবিন আহসান। তিনি বলেন, দেশি যে কাগজের দাম এক বছর আগে ১ হাজার ৬০০ টাকা ছিল, সেটা এখন ৩ হাজার ৪০০ টাকা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘ডলার–সংকটের কারণে বিদেশি কাগজের দাম বেশি হয়েছে, এটা মানা যায়। কিন্তু দেশে যে কাগজ উৎপাদিত হয়, তার দাম সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। এটি আমাদের ওপর সবচেয়ে বড় চাপ। কাগজকলের মালিকেরা সিন্ডিকেট করে কাগজের দাম বাড়িয়েছেন। সরকার তা ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে।’

পরিষদ বলছে, বইমেলায় সব প্রকাশনার জন্য ১৬ ফুট বাই ৮ ফুট আকারের স্টল বরাদ্দ দিতে হবে। প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ দেওয়া বন্ধ রাখতে হবে। তবে এই সংকট কেটে গেলে আবার প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ দেওয়া যাবে। উদ্যানের পূর্ব পাশে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের পাশে কোনো বইয়ের স্টল বরাদ্দ দেওয়া যাবে না। কারণ, গত দুটি মেলায় সেসব স্থানে স্টল বরাদ্দ পাওয়া প্রকাশকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আর লিটলম্যাগ সম্পাদকদের সঙ্গে আলোচনা করে তাঁদের জন্য স্বতন্ত্র জায়গা বরাদ্দ রাখতে হবে।

সংগঠনের সদস্যসচিব এক রঙ্গা এক ঘুড়ির প্রতিষ্ঠাতা এস এম মাসুদুল ইসলাম বলেন, প্রতিবছরের শেষ তিন মাসে এসে কলমালিক ও আমদানিকারকদের একটি সিন্ডিকেট কাগজের দাম বাড়িয়ে দেয়। বৈশ্বিক মন্দায় এ বছর সেটা প্রকট আকার ধারণ করেছে।

সব ব্যবসায় ভর্তুকি দিতে চাইলেও প্রকাশনার ক্ষেত্রে সরকারের গা ছাড়া ভাব বলে অভিযোগ করেন উত্তরণের প্রকাশক আহমেদ মাসুদুল হক।

আনন্দমের প্রকাশক শ্রাবণী মজুমদার বলেন, করোনার কারণে গত দুই বছরে ছোটখাটো প্রকাশনীর আয়ের কোনো জায়গা ছিল না। এ পরিস্থিতিতে বইমেলায় ব্যয় কিছুটা হলেও কমিয়ে আনা যায়, বাংলা একাডেমিকে সেই চেষ্টা করতে হবে।

মানুষকে মেলায় আনতে বিআরটিসি বাস সার্ভিস চালু করা, নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া, খাবারের দোকান নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখাসহ বইমেলাকে সামনে রেখে মোট ১৫টি প্রস্তাবনা দিয়েছে সংগঠনটি।