পঞ্চম তলা থেকে আগুন ছড়িয়েছে ভবনে: প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য

খাজা টাওয়ারে আগুন লাগার পর সেখানে উদ্ধারকাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা
ছবি: ফায়ার সার্ভিস

খাজা টাওয়ার ভবনের ১২ তলায় বসেন সালমান হোসেন। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল পৌনে চারটার দিকে আগুন লাগার বিপৎসংকেত (ফায়ার অ্যালার্ম) শুনে সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামছিলেন তিনি। কিন্তু নিচের দিক থেকে আসা ধোঁয়ার কারণে আর নামতে পারেননি তিনি। পরে আবার ১২ তলায় উঠে যান সালমান। সেখান থেকে ভবনের পেছনের দিকে থাকা অন্য আরেকটি সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামেন তিনি।

সালমান হোসেনের ভাষ্য, ‘সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামার সময় দেখি পঞ্চম তলায় (লিফটের-৪) দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। ওই আগুনই পুরো ভবনে ছড়িয়েছে।’

সন্ধ্যা সাড় সাতটার দিকে ভবনের পাশেই তাঁর সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের।
সালমান হোসেন সাইফ পাওয়ারটেকের সহকারী ব্যবস্থাপক হিসেবে আছেন। খাজা টাওয়ার ভবনের ১২ তলায় ব্যাটারি ডিভিশনে বসেন তিনি। ওই তলায় প্রায় ৩০ জন সহকর্মী বসেন। দুজন ছাড়া সবাই নিরাপদে নেমে আসতে পেরেছেন বলে তিনি জানান। নামতে গিয়ে দুজন সহকর্মীর পা ভেঙে গেছে বলে তিনি শুনেছেন। তাঁদের একজনের নাম গোপাল। আরেকজনের নাম তিনি নিশ্চিত করে বলতে পারেননি।

সাইফ পাওয়ারটেকের আরেক কর্মী আসাদুর রহমান বলেন, ‘আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে স্যার আমাকে দেখতে বলেন, কোথায় আগুন লেগেছে। আমি বের হয়ে সিঁড়ির দিকে গিয়ে দেখি নিচের দিক থেকে ধোঁয়া আসছে। পরে দৌড়ে গিয়ে স্যারকে বলি—নিচে আগুন লেগেছে, দ্রুত চলেন স্যার।’

আসাদুর রহমান সাইফ পাওয়ারটেকে অফিস সহকারী হিসেবে কাজ করেন। ষষ্ঠ তলায় (লিফট-৫) তিনি কাজ করেন, সেটি কোম্পানির হিসাব বিভাগ।

প্রতিষ্ঠানটির এ দুজন কর্মী জানান, খাজা টাওয়ারের সাতটি তলায় সাইফ পাওয়ারটেকের কার্যালয় রয়েছে।

খাজা টাওয়ার ভবনের পেছনের দিকে ভাড়াবাসায় থাকেন মাছ বিক্রেতা আরসাদ আলী। তিনি বলেন, ‘আগুন লাগার খবর শুনে দ্রুত ছুটে যাই। এমন সময় দেখি একজন মাঝবয়সী নারী ইন্টারনেটের তারে ঝুলে নিচে নামার চেষ্টা করছেন। তখন হাত ফসকে গিয়ে ওই নারী নিচে পড়ে যান। তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।’ ওই সময় তারে ঝুলে এভাবে আরও কয়েকজনকে নামতে দেখেছেন বলেও জানান তিনি।

বিকেল পাঁচটার দিকে রাজধানীর মহাখালীতে গুলশান-মহাখালী সড়কের পাশে অবস্থিত খাজা টাওয়ারে আগুন লাগে। আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের ১১টি ইউনিটের ৭২ জন সদস্য কাজ করছেন। পাশাপাশি সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, র‍্যাব, পুলিশ, আনসার ও এনএসআইয়ের সদস্যরা ঘটনাস্থলে উদ্ধারকাজে সহযোগিতা করছেন।