আইফোন ফিরিয়ে দেওয়া সেই রিকশাচালককে পুরস্কার দিলেন মেয়র আতিক

রিকশাচালক আমিনুল ইসলামকে নগদ ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলামছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এক মার্কিন নাগরিকের আইফোন পেয়ে তা ফেরত দিয়েছিলেন রিকশাচালক আমিনুল ইসলাম। তাঁকে আজ নগদ ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম। আজ রোববার দুপুরে গুলশান-২–এ উত্তর সিটি করপোরশেনের নগর ভবনে এক অনুষ্ঠানে ব্যক্তিগত তহবিল থেকে এ পুরস্কার তুলে দেন মেয়র।

পুরস্কার পেয়ে আমিনুল ইসলাম বলেন, তিনি পুরস্কার পেয়ে খুশি। তবে কোনো পুরস্কারের আশায় তিনি এ কাজ করেননি। অন্যের সম্পদ তিনি ব্যবহার করতে চাননি বলেই ফেরত দিয়েছেন।

এর আগে গত শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) আসাদুজ্জামান রিকশাচালক আমিনুল ইসলামকে সততার পুরস্কার হিসেবে একটি সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন। পাশাপাশি তাঁকে তিনি নগদ টাকাও পুরস্কার দেন।

উল্লেখ্য, ৫ আগস্ট রিকশায় যাত্রী বসার গদির ফাঁকে বন্ধ অবস্থায় রিকশাচালক আমিনুল ইসলাম একটি মুঠোফোন (আইফোন ১৩ প্রো ম্যাক্স) পান। ৯ আগস্ট পুলিশের মাধ্যমে মুঠোফোনটি তিনি মালিকের কাছে ফিরিয়ে দেন।

এ বিষয়ে গত বুধবার প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে ‘মার্কিন নাগরিকের আইফোন পেয়ে ফিরিয়ে দিলেন রিকশাচালক’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।

রিকশাচালক আমিনুল ইসলাম বলেন, আট বছর ধরে গুলশান এলাকায় রিকশা চালান তিনি। ৫ আগস্ট গুলশান-২ নম্বর এলাকায় যাত্রী নামিয়ে দেওয়ার পর তিনি গদির ফাঁকে (যাত্রী বসার স্থান) মুঠোফোনটি দেখতে পান। দেখে মনে হয়, মুঠোফোনটি বেশ দামি। মুঠোফোনটি বন্ধ অবস্থায় ছিল। চার্জ না থাকায় সেটি চালু করাও যাচ্ছিল না। ফলে মুঠোফোনটির মালিক কে, তা বুঝতে পারছিলেন না তিনি।

আমিনুল বলেন, মুঠোফোনটির মালিককে খুঁজে বের করতে তা চালু করার দরকার ছিল। তাই তিনি উত্তর বাড্ডার একটি দোকানে গিয়ে চার্জার কেনার চেষ্টা করেন। কিন্তু দোকানদার চার্জারের দাম অনেক বেশি চান। তাই তিনি চার্জার না কিনে ফিরে আসেন। পরে তিনি মুঠোফোনটির সিম খুলে ফেলেন। নিজের মুঠোফোনে সিমটি চালু করেন। সিম চালু করার পর এক নারীর ফোন আসে। তিনি মুঠোফোনটির মালিকানা দাবি করেন। তখন তিনি ওই নারীকে মুঠোফোনটি নিয়ে যেতে বলেন। পরে তিনি পুলিশের মাধ্যমে মালিকের কাছে মুঠোফোনটি ফিরিয়ে দেন।

গুলশান থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আবদুল কাদির প্রথম আলোকে বলেন, মার্কিন নাগরিক সীমা আহম্মেদ তাঁর ছেলেকে নিয়ে রিকশায় চড়ে একটি রেস্টুরেন্টে গিয়েছিলেন। সে সময় অসাবধানতাবশত মুঠোফোনটি পড়ে যায়। পরে তিনি গুলশান থানায় জিডি করেন। মুঠোফোনটিতে রোবট তৈরির একটি প্রকল্পের অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-উপাত্ত ছিল। আমিনুল মুঠোফোনটি পেয়ে সততার সঙ্গে ফেরত দিয়েছেন।

আরও পড়ুন