কমলাপুরে ট্রেন চলাচল আজও স্বাভাবিক, দূরপাল্লার যাত্রীদের ভিড়

কমলাপুর রেলস্টেশনে আজ সব ট্রেন ছেড়েছে ঠিক সময়ে। প্ল্যাটফর্মে ছিল যাত্রীদের ভিড়। ১ নভেম্বর
ছবি: তানভীর আহম্মদ

বিএনপির ডাকা তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচির কারণে দূরপাল্লার বাস ছাড়ছে না। এ কারণে দূরপাল্লার যাত্রীরা ভিড় করছেন ট্রেনে।

বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর ডাকে তিন দিনের অবরোধের কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন চলছে আজ বুধবার । সকাল ৯টার দিকে কমলাপুর রেলস্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক আছে। দূরপাল্লার যাত্রীরা ভিড় করছেন কমলাপুর রেলস্টেশনে।

প্রথম আলোর প্রতিবেদক কুড়িগ্রাম, রংপুর, কিশোরগঞ্জ ও ময়মনসিংহগামী অন্তত ১৫ জন দূরপাল্লার যাত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁদের বেশির ভাগ যাত্রী বলেছেন, দূরপাল্লার বাস চলাচল না করায় ট্রেনের টিকিট করেছেন।

কমলাপুর রেলস্টেশনের ৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মে বসে ছিলেন বগুড়ার আক্তার হোসেন ও শামীমা আক্তার। এই দম্পতি বললেন, তাঁরা কক্সবাজার ভ্রমণ শেষে ২৯ অক্টোবর ঢাকায় আসেন। গত পরশু বগুড়াগামী বাসে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন; কিন্তু বাস ছাড়েনি। গতকালও কয়েকটি বাস কাউন্টারে যোগাযোগ করেছিলেন, কিন্তু কাউন্টার প্রতিনিধিরা টিকিট দিতে তেমন সাড়া দেননি, তাই বাধ্য হয়ে ট্রেনে যাচ্ছেন।

আক্তার ও শামীমা রংপুর এক্সপ্রেসের টিকিট করলেও এ ট্রেন ছাড়তে বিলম্ব হয়েছে। সকাল ৯টা ১০ মিনিটে কমলাপুর রেলস্টেশন ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও ছেড়েছে ১০টার পর।

এই ট্রেনের যাত্রী ছিলেন কুড়িগ্রামের এনজিওকর্মী রিয়াজুল ইসলাম। তিনি জরুরি কাজে ২৯ অক্টোবর ঢাকায় এসেছিলেন। গত পরশু বাড়ি ফেরার কথা থাকলেও বাস না পাওয়ায় যেতে পারেননি। রিয়াজুল বলেন, গতকালও তিনি ঢাকা থেকে কুড়িগ্রামগামী নাবিল, হক ও এনা পরিবহনের কাউন্টারে যোগাযোগ করেছিলেন। কিন্তু কাউন্টারের প্রতিনিধিরা বলেছেন, আজ বুধবারও বাস ছাড়বে না, তাই ট্রেনে যাচ্ছেন।

কমলাপুর রেলস্টেশনের কাউন্টারে যাত্রীদের ভিড়। ১ নভেম্বর
ছবি: তানভীর আহম্মদ

কমলাপুর রেলস্টেশনের স্টেশনমাস্টার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, বুধবার ভোর ৪টা ৪০ মিনিট থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত আন্তনগর, মেইল ও কমিউটার মিলে ১২টি ট্রেন কমলাপুর রেলস্টেশন ছেড়ে গেছে। এসেছে ৬টি আন্তনগর ট্রেন।

একটি ছাড়া সব ট্রেন শিডিউল অনুযায়ী চলছে। শুধু রংপুর এক্সপ্রেসে এক ঘণ্টা বিলম্ব হয়েছে।

বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে জামালপুরের তারাকান্দির উদ্দেশে কমলাপুর স্টেশন ছেড়ে গেছে অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস। এই ট্রেনে মা–সহ ময়মনসিংহে যাচ্ছেন শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান। তিনি বলেন, যা অবস্থা, বাসে যেতে ভয় লাগে। কখন, কোথায় বাসে আগুন দেওয়া হয়। তাই ট্রেনে টিকিট করেছেন।

নুসরাতের মতো দূরপাল্লার অনেক যাত্রী অবরোধের মধ্যে বাসে চলাচল করতে নানা আশঙ্কার কথা বললেন।

তবে অবরোধের দ্বিতীয় দিনেও কমলাপুর রেলস্টেশনের ভেতরে ও বাইরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশেষ নিরাপত্তা দিতে দেখা গেছে।

কমলাপুর রেলস্টেশনে কথা হয় বাংলাদেশ রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর ঢাকা বিভাগীয় কমান্ড্যান্ট মো. শহিদুল্লাহর সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, রেলের নিরাপত্তা বাহিনী, রেলওয়ে পুলিশ এবং ডিএমপির সমন্বয়ে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার তথ্য পাওয়া যায়নি।