হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিলের ওপর রায় ৪ জুন

হাইকোর্ট ভবনফাইল ছবি

রাজধানীর সূত্রাপুরে আশিকুর রহমান খান ওরফে অপু হত্যা মামলায় হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আসামি ও রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিলের ওপর রায়ের জন্য আগামী ৪ জুন দিন ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা পৃথক আপিলের ওপর শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ আজ মঙ্গলবার এ দিন ধার্য করেন।

ওই মামলায় ২০১৮ সালের ৭ মে রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ে দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামিকে খালাস দেওয়া হয়। এই মামলায় ছয় আসামির মধ্যে বিচারিক আদালতের রায়ে দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড ও চারজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছিল। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকা দুই আসামি এবং যাবজ্জীবন থেকে খালাস পাওয়া দুজনের ক্ষেত্রে পৃথক আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। পৃথক আপিলের ওপর একসঙ্গে শুনানি হয়।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন। আসামিপক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী, সরওয়ার আহমেদ ও মোশতাক আহমেদ।

পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, শুনানির একপর্যায়ে প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেন যে এখন অপরাধের ধরন পরিবর্তন হয়েছে, তাই অপরাধ নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতি উন্নয়নের বিষয়ে ভাবতে হবে। পৃথক আপিলের ওপর শুনানি শেষে আপিল বিভাগ রায়ের জন্য আগামী ৪ জুন দিন ধার্য করেছেন।

আইনজীবী সূত্র বলছে, ২০০৮ সালের ২৩ মে সন্ধ্যায় সূত্রাপুর থানার ওয়ারী হেয়ার স্ট্রিটের বাসা থেকে আইনজীবী রইস উদ্দিনের ছেলে নিহত আশিকুরের ভাই আরিফুর রহমান খানের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে স্থানীয় সিলভার ডেল স্কুলের পাশে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। খবর পেয়ে দুই ভাই আশিকুর ও আতিকুর রহমান সেখানে গেলে সন্ত্রাসীরা তাঁদের এলোপাতাড়িভাবে গুলি করে। স্থানীয় লোকজন তিন ভাইকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে আশিকুরকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। অপর দুই ভাই প্রাণে বেঁচে গেলেও পঙ্গু হয়ে যান। ওই ঘটনায় নিহতের বোন আতিয়া খান বাদী হয়ে সূত্রাপুর থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় ২০১২ সালের ১৩ মার্চ রায় দেন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল–১। রায়ে দুই আসামিকে মৃত্যুদণ্ড এবং চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

এরপর আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও দণ্ডাদেশের রায়ের বিরুদ্ধে চার আসামির করা আপিল ও জেল আপিলের শুনানি নিয়ে ২০১৮ সালে হাইকোর্ট রায় দেন। এই চারজনের মধ্যে দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকে এবং যাবজ্জীবন থেকে খালাস পান দুজন। মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকা দুই আসামি হলেন মো. মঞ্জুরুল আবেদীন ওরফে রাসেল ও নওশাদ হোসেন মোল্লা ওরফে রবিন। খালাস পাওয়া দুজন হলেন মো. আলী ওরফে মুন্না ও ইফতেখার বেগ ওরফে ঝলক। তবে বিচারিক আদালতের রায়ে যাবজ্জীবন দণ্ডিত অপর দুই আসামি মাহবুব আলম ও বিমল চন্দ্র দাস ওরফে বিপ্লব শুরু থেকেই পলাতক বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ।