গাবতলী টার্মিনাল ঘিরে ৬টি স্থানে আওয়ামী লীগের অবস্থান

শামিয়ানা টানিয়ে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের অবস্থান নিতে দেখা যায়। আজ রাজধানীর গাবতলী টার্মিনাল এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

বিএনপির ডাকে দেশব্যাপী অবরোধ কর্মসূচির মধ্যে রাজধানীর গাবতলী এলাকায় ছয়টি স্থানে শামিয়ানা টানিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীরা অবস্থান করছেন। গাবতলী আন্তজেলা বাস টার্মিনাল কেন্দ্র করে এসব শামিয়ানা টানানো হয়েছে।

এ ছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে কোথাও শামিয়ানা টানিয়ে, কোথাও আবার ফুটপাতে চেয়ার পেতে বসে থাকতে দেখা যায় ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের। কোনো কোনো এলাকায় মিছিলও করেন ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা। তবে আগের দুটি অবরোধের তুলনায় আজ বুধবার দলটির অবস্থান কর্মসূচিতে নেতা-কর্মীদের উপস্থিতি ছিল তুলনামূলক কম।

অবস্থান কর্মসূচি পালনকারী আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বলছেন, অবরোধের নামে বিএনপি সারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় অগ্নিসন্ত্রাস ও হামলার ঘটনা ঘটাচ্ছে। গাবতলী টার্মিনাল কেন্দ্র করে দলটি যাতে কোনো অরাজকতা সৃষ্টি করতে না পারে, সে জন্য অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে তাঁরা।

বিএনপি এবং সমমনা দল ও জোটের ডাকা তৃতীয় দফা অবরোধ কর্মসূচির প্রথম দিন বুধবার গাবতলীসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে ক্ষমতাসীনদের এভাবেই অবস্থান নিতে দেখা গেছে।  

এদিন গাবতলী থেকে দূরপাল্লার কোনো গন্তব্যে বাস ছাড়েনি। টার্মিনালে যাত্রীদের উপস্থিতিও ছিল না। তবে এর আগে দুই দফায় দেশব্যাপী হওয়া অবরোধের তুলনায় এদিন রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে যানবাহনের চলাচল ও মানুষের উপস্থিতি কিছুটা বেশিই দেখা যায়।

সড়কে শামিয়ানা টানিয়ে অবস্থান নিতে দেখা যায় ক্ষমতাসী দলের নারী নেতা–কর্মীরা অবস্থান নেন। আজ সকালে রাজধানীর গাবতলী–মাজার রোড এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

সকালে গাবতলী টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, ফুটপাতে শামিয়ানা টানিয়ে অবস্থান নিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা। দারুস সালাম থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি এ বি এম মাজহারুল আনাম ও সাধারণ সম্পাদক কাজী ফরিদুল হকের নেতৃত্বে অবস্থান নিয়েছেন তাঁরা। কিছু দূরে টার্মিনালের সামনে সড়কের এক পাশে শামিয়ানা টানিয়ে আরও কিছু নেতা–কর্মী অবস্থান করছেন।

বিআরটিসি বাস ডিপোর সামনে সড়কে শামিয়ানা টানিয়ে চেয়ার পাতা হয়েছে। বাজানো হচ্ছে আওয়ামী লীগের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে লেখা বিভিন্ন গান। সেখানে যুবলীগের থানা ও ওয়ার্ডের নেতা-কর্মীরা অবস্থান নিয়েছেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সেখানে ১২-১৫ জনকে দেখা গেছে।

টার্মিনালের পাশে একটি আবাসিক হোটেলের সামনে আরেকটি শামিয়ানা দেখা যায়। সকালে ওই শামিয়ানার নিচে চেয়ারগুলো গোছানো অবস্থায় ছিল। দু–তিনজন ছাড়া কাউকে সেখানে দেখা যায়নি। ওই জায়গায় ব্যানারে লেখা, ‘বিএনপি–জামায়াতের নৈরাজ্য–সন্ত্রাস ও দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে শান্তি সমাবেশ ও গণমিছিল’। আর নিচে ব্যবসায়ী লুৎফর রহমানের নাম লেখা।

টার্মিনালের ঠিক উল্টো দিকে দারুস সালাম থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীদের অবস্থান নিতে দেখা যায়। সেখানে দারুস সালাম থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ইমরান মতি ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা অবস্থান করেন।

ইমরান মতি বলেন, ‘বিএনপির অবরোধ আমরা মানি না। অবরোধের নাম করে বিএনপি দেশে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করছে। দলটির সন্ত্রাসী কার্যকলাপ রুখে দিতেই আমরা সতর্ক অবস্থানে আছি।’

সড়কে চেয়ার নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা–কর্মীদের অবস্থান। আজ রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে
ছবি: প্রথম আলো

গাবতলী-মাজার রোড মোড়ে সাবেক সংসদ সদস্য সাবিনা আক্তারের নেতৃত্বে আরেকটি শামিয়ানা টানানো হয়েছে। সেখানে অর্ধশতাধিক নারী নেতা-কর্মীকে চেয়ারে বসে অবস্থান করতে দেখা গেছে। বেলা পৌনে ১১টার দিকে সেখানে দলবল নিয়ে সেখানে হাজির হন সাবিনা আক্তার।

সেখানে কথা হয় দারুস সালাম থানা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক ঝুমুর হাওলাদারের সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দিতে এবং জনগণের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে আমরা মাঠে অবস্থান করছি। মানুষ বিএনপির অবরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে।’

এ ছাড়া বেলা ১১টার দিকে কারওয়ান বাজার এলাকায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা অবরোধের বিরুদ্ধে মিছিল করেন। অবরোধ বিরোধী স্লোগান দিতে দেখা যায় তাঁদের। এর আগে সকালে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে সমাবেশ করেন নেতা-কর্মীরা। বিকেলেও সেখানে নেতা-কর্মীদের ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে অবস্থান নিতে দেখা গেছে।