ডেঙ্গুতে ২৪ ঘণ্টায় ৪ জনের মৃত্যু
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ডিসেম্বরের ১৭ দিনে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর চলতি বছর এডিস মশাবাহিত এই রোগে মারা গেছেন ১ হাজার ৬৮২ জন।
আজ রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল শনিবার সকাল আটটা থেকে আজ সকাল আটটা পর্যন্ত) ডেঙ্গু নিয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৫৪ জন। এর মধ্যে ঢাকার হাসপাতালগুলোয় ৬৩ জন ও ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোয় ১৯১ জন ভর্তি হন।
চলতি বছর দেশে এ পর্যন্ত ডেঙ্গু নিয়ে ৩ লাখ ১৯ হাজার ২৩৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ১ লাখ ৯ হাজার ৫১১ জন এবং ঢাকার বাইরে ভর্তি হন ২ লাখ ৯ হাজার ৭২৫ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দৈনিক ডেঙ্গুবিষয়ক তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, দেশে চলতি বছরের মার্চ মাস ছাড়া প্রতি মাসেই ডেঙ্গুতে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ গত ১৪ জুলাই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। পাঁচ মাস পর গতকালও ডেঙ্গুতে মৃত্যুহীন দিল ছিল।
ডেঙ্গুর লার্ভা বা শূককীট জরিপ করে ডেঙ্গু ভাইরাস যে এ বছর ব্যাপক আকারে ছড়াবে, তা বছরের শুরুতেই জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগনিয়ন্ত্রণ শাখা। পরে একাধিকবার লার্ভা জরিপ হয় ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। দেখা যায়, এর বিস্তৃতি আগের যেকোনো বছরের চেয়ে বেশি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনসহ স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন দপ্তরকে এসব বিষয়ে জানায়ও। তবে ডেঙ্গুর সংক্রমণ অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যায়। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে একই অবস্থা ছিল।
গত শতাব্দীর ষাটের দশকে এ দেশে ডেঙ্গু শনাক্ত হয়। এরপর ২০০০ সালে প্রথম বড় আকারে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। ডেঙ্গু ছিল মূলত ঢাকা শহরকেন্দ্রিক। এরপর প্রতিবছর কমবেশি ডেঙ্গুর সংক্রমণ দেখা দিতে থাকে। তবে ডেঙ্গু বড় বড় শহরেই সীমাবদ্ধ ছিল। ২০১৯ সালে বড় বড় শহরের পাশাপাশি কয়েকটি গ্রামেও ডেঙ্গু শনাক্ত হয়।
রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) তথ্য অনুযায়ী, ২০০০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ৮৫৩ জন। এ বছর ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যু অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।