‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা’র ওপর হামলার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ-সমাবেশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে ‘সংক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা’। ১৬ জানুয়ারিছবি: প্রথম আলো

‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা’র কর্মসূচিতে হামলার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পৃথক বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। এসব বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে হামলার ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে শাস্তি দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।

হামলার প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে ‘সংক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা’। এ সময় এই সংগঠনের আজকের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে পুলিশি হামলার প্রতিবাদ জানানো হয়।

সমাবেশে বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্ট কাউন্সিল ঢাকা মহানগরের সেক্রেটারি নু মং গতকালের হামলা নিয়ে বলেন, ‘পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুসারে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে এনসিটিবির উদ্দেশে যাচ্ছিলাম। সেখানে স্টুডেন্ট ফর সভারেন্টি নামক উগ্র সংগঠনের সদস্যরা মাথায় পতাকা বেঁধে আক্রমণের জন্য অপেক্ষা করছিল। তারা আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। অথচ এই হামলায় পুলিশ তাদের সহযোগিতা করেছে।’

সমাবেশে অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন। তিনি বলেন, ‘আপনারা কারও সঙ্গে আলোচনা না করে পাঠ্যপুস্তক থেকে এভাবে কয়েকজনের দাবির মুখে কোনো কিছু বাদ দিতে পারেন না। আজকে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার মধ্যে আবার যদি হামলা করা হয়, তাহলে জুলাই আন্দোলনের আগে আর পরে পার্থক্য কোথায়?’

‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা’র ওপর হামলার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সমাবেশ করেন। ১৬ জানুয়ারি
ছবি: প্রথম আলো

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রতিবাদ

গতকাল রাজধানীর মতিঝিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) ভবনের সামনে ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা’র ওপর হামলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের তিনজন শিক্ষার্থীও আহত হয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে বিভাগের ১৪তম ব্যাচের রুপাইয়্যা শ্রেষ্ঠা গুরুতর আহত হয়ে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন, বিভাগের অন্য দুই শিক্ষার্থী ১৫তম ব্যাচের রাহী নায়েব ও ববি বিশ্বাসও আহত হন।

এনসিটিবির সামনে হামলার প্রতিবাদে আজ দুপুরে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন বিভাগটির শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা। সমাবেশে বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, পাঠ্যবই থেকে আদিবাসীদের স্বীকৃতি ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। এমনকি তাদের সহ্যও করা হচ্ছে না।

বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক খোরশেদ আলম বলেন, ‘বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে আমরা লড়াই করে স্বৈরাচার সরকারকে দেশত্যাগ করতে বাধ্য করেছি। কিন্তু আজ আবারও আমাদের বৈষম্যের শিকার হয়ে এখানে দাঁড়াতে হয়েছে।’

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক আবদুর রাজ্জাক খান, শিক্ষার্থী রাফিজ খান ও হামলায় আহত শিক্ষার্থী রাহী নায়েব।

আরও পড়ুন