‘গুম হয়ে গেছেন রবীন্দ্রনাথ’

রাজু ভাস্কর্যের পাশ থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতীকী ভাস্কর্য সরিয়ে ফেলার প্রতিবাদে ব্যানার ঝুলিয়ে দিয়েছেন উদ্যোক্তারা
ছবি: প্রথম আলো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি)–সংলগ্ন রাজু ভাস্কর্যের পাশে স্থাপিত বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাস্কর্যটি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। ভাস্কর্যের উদ্যোক্তারা বলছেন, রবীন্দ্রভাস্কর্যটি ‘গুম’ করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে রাজু ভাস্কর্যের সামনে ‘গুম হয়ে গেছেন রবীন্দ্রনাথ!’ লেখা ব্যানার ঝুলিয়ে দিয়েছেন তাঁরা।

দেশে মুক্তচিন্তা, সৃজনশীলতা ও স্বাধীন মতপ্রকাশের ওপর সেন্সরশিপ এবং সব ধরনের নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের অংশ হিসেবে গত মঙ্গলবার বিকেলে ভাস্কর্যটি স্থাপন করা হয়েছিল। সাড়ে ১৯ ফুট উচ্চতার এই ভাস্কর্য তৈরি করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের একদল শিক্ষার্থী।

বাঁশ, থার্মোকল ও বইয়ের কাগজ দিয়ে তৈরি ওই ভাস্কর্যে পেরেকবিদ্ধ ‘গীতাঞ্জলি’ হাতে বিষণ্ণ মুখে দাঁড়িয়ে থাকা রবীন্দ্রনাথের মুখে ছিল টেপের বাঁধন। ভাস্কর্যটি তৈরির এই উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীরাও। লেখক, শিল্পী ও সাংবাদিকসহ দেশের সব পর্যায়ের মানুষের স্বাধীন মতপ্রকাশে বাধার প্রতিবাদে নির্মিত ভাস্কর্যটি চলতি ফেব্রুয়ারি মাসে রাজু ভাস্কর্যের পাশে রাখার পরিকল্পনা ছিল তাঁদের।

এই উদ্যোগের নেতৃত্বে ছিলেন ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ও চারুকলার ভাস্কর্য বিভাগের ছাত্র শিমুল কুম্ভকার। তিনি আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজ সকালে এসে দেখি, রবীন্দ্রনাথের ভাস্কর্যটি রাজু ভাস্কর্যের পাশে নেই। ভাস্কর্যটিকে গুম করে ফেলা হয়েছে। কে বা কারা এই কাজ করেছে, তা আমরা জানি না।’

দেশের সব পর্যায়ের মানুষের স্বাধীন মতপ্রকাশে বাধার প্রতিবাদে ভাস্কর্যটি নির্মাণ করা হয়েছে
ছবি: সৈয়দ জাকির হোসেন
আরও পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী ক্যাম্পাসে ভাস্কর্য বসানোর বিষয়টিরই সমালোচনা করছেন৷ তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘একটা ভাস্কর্যের পাশে আরেকটা ভাস্কর্য নিয়ে আসা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। অনুমতি ছাড়া ক্যাম্পাসে কারা এই কাজ করল, তা আমরা জানার চেষ্টা করছি। যে চিন্তা থেকেই ভাস্কর্যটি বসানো হয়ে থাকুক, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এটা শেয়ার করার দরকার ছিল। ক্যাম্পাসে ভাস্কর্য স্থাপনের তো কিছু নিয়মনীতি আছে, যে-ই সেটি সরিয়ে থাকুক না কেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে কেউ এসে একটি ভাস্কর্য বসিয়ে যাবে, তা তো প্রত্যাশিত নয়।’