ডেঙ্গু প্রতিরোধ কার্যক্রমের ঘাটতি পর্যালোচনা হচ্ছে: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামছবি প্রথম আলো

সরকারের পক্ষ থেকে ডেঙ্গু প্রতিরোধে নানা উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলা হয়। কিন্তু দেশে প্রতিবছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত ব্যক্তির সংখ্যা বাড়ছে। এ বছরও ডেঙ্গু বড় আকারে দেখা দেবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, সেগুলোর ঘাটতি পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী এ কথা জানান। ডিআরইউ আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি সৈয়দ শুকুর আলী ও সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মহি উদ্দিন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে সরকার কী পদক্ষেপ নিচ্ছে—এমন প্রশ্নের জবাবে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘২০১৯ সাল থেকে ডেঙ্গুর তীব্রতা বাড়ছে। সিঙ্গাপুর, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া, শ্রীলঙ্কা ও ভারতের মতো দেশ আরও আগে থেকে ডেঙ্গু মোকাবিলা করছে। তারা যা যা করেছে, সেগুলো তাদের কাছ থেকে জেনেছি। সেগুলো আমলে নিয়ে বিস্তৃত উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমরা যেসব উদ্যোগ নিয়েছি, সেগুলোর মধ্যে কোনো ঘাটতি রয়েছে কি না, সেগুলো পর্যালোচনা করছি।’

২০২৩ সালে ডেঙ্গুর সব রেকর্ড ভেঙে যায়। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন ৩ লাখ ২১ হাজার ২৭ জন। এর মধ্যে মারা যান ১ হাজার ৭০৫ জন। গত বছরের অভিজ্ঞতার ওপর ভিত্তি করে জনস্বাস্থ্যবিদ, কীটতত্ত্ববিদ ও সরকারি কর্মকর্তারা এ বছরের শুরু থেকে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলে আসছেন যে এ বছরও ডেঙ্গু বড় আকারে দেখা দেবে। জানুয়ারি থেকে ২২ মে পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৬৮৩ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ৩৩ জন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমন্বয়ের বিষয়ে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাস্থ্য বিভাগের সাফল্য ও ব্যর্থতা আমি মূল্যায়ন করব না, তাহলে সমন্বয়হীনতা আরও বাড়বে। তাদের কাজের বিষয়ে কোনো হস্তক্ষেপ করব না। ডেঙ্গু প্রতিরোধে খুব ভিন্ন কিছু করার নেই। মানুষ আগের থেকে সতর্ক হয়েছে।’

বিভিন্ন সেবা সংস্থার সমন্বয়হীন সড়ক খোঁড়াখুঁড়িতে ভোগান্তি প্রসঙ্গে তাজুল ইসলাম বলেন, নগর গড়ে উঠেছে অপরিকল্পিত ও সনাতনীভাবে। কোন সংস্থা কখন টাকা পাবে, সবাই পরিকল্পনা করে একসঙ্গে কাজ করবেন, এমন সমন্বয় পুরো করা যাবে, এটা বাস্তবসম্মত হবে না। তবে গত ১০ বছরে সমন্বয়হীন খোঁড়াখুঁড়ি আগের চেয়ে অনেকটা কমেছে।

সারা দেশে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) বিস্তৃত সড়ক নেটওয়ার্ক। এই গ্রামীণ সড়কের একটা বড় অংশ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এ প্রসঙ্গে তাজুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টি-বন্যায় সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয় বেশি। বেশ কিছু সড়ক নষ্ট আছে, সেটি সঠিক। আসন্ন বাজেটে এলজিইডিকে রক্ষণাবেক্ষণ খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে।

গত বছরের জুনে এক অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, দেশের সিটি করপোরেশনগুলোর আওতায় থাকা বাড়ির ছাদে বাগান করলে ১০ শতাংশ গৃহকর (হোল্ডিং ট্যাক্স) ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তবে এখন পর্যন্ত এ–সংক্রান্ত কোনো পরিপত্র জারি হয়নি।

ছাদে বাগানে গৃহকর ছাড়ের বিষয়ে তাজুল ইসলাম অনুষ্ঠানে বলেন, ‘আমার মনে হয়, এটার প্রজ্ঞাপন হয়েছে। সিটি করপোরেশনকে ছাড় দিতে বলা হয়েছে। প্রজ্ঞাপন না হয়ে থাকলে কোথায় আটকে আছে, সে ব্যবস্থা নেব।’ পরে মন্ত্রীর দপ্তর থেকে জানানো হয়, ছাদে বাগানে করছাড়ের বিষয়ে প্রজ্ঞাপন হয়নি। বিষয়টি নিয়ে খুব শিগগির একটি সভা করা হবে।