বাংলা একাডেমির প্রাঙ্গণে বই নিয়ে প্রাণস্পন্দন জাগল আবার। আজ বুধবার থেকে শুরু হয়েছে ‘বিজয় বইমেলা’। মুক্তিযুদ্ধের মহান বিজয়ের মাস উদ্যাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি (বাপুস) প্রথমবারের মতো বিজয় বইমেলার আয়োজন করল।
সন্ধ্যায় একাডেমির বর্ধমান হাউসের পাশে বিজয় মঞ্চে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বাপুসের সভাপতি রেজাউল করিম। মেলার উদ্বোধনের নির্ধারিত সময় ছিল বিকেল চারটা। প্রধান অতিথি হিসেবে সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর বিজয় বইমেলা উদ্বোধনের কথা ছিল। তবে তিনি সন্ধ্যা ছয়টা অবধি আসতে না পারায় তাঁর অনুপস্থিতিতেই উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয়।
উদ্বোধন করে বাপুসের সভাপতি রেজাউল করিম শুরুতেই মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অর্জন করেছি বলেই আজ আমরা এই বিজয় বইমেলা করতে পারছি।’ জাতি গঠনের জন্য বইয়ের গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাপুস জনগণের, বিশেষত তরুণ প্রজন্মের পাঠাভ্যাস বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। এখন থেকে প্রতিবছর নিয়মিতভাবে বিজয় বইমেলা আয়োজন করা হবে। এ ছাড়া আগামী বছর সারা দেশের ৬৪ জেলায় বইমেলার পরিকল্পনা রয়েছে।
বাপুসের পরিচালক ও মেলা আয়োজক কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী আবুল বাশার ফিরোজ বলেন, বাপুসের উদ্যোগে বিজয় বইমেলা আয়োজনের মধ্য দিয়ে একটি মাইলফলক স্থাপিত হলো। লেখক–পাঠকদের সমাগমে এই মেলা প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাপুসের সহসভাপতি গোলাম ইলাহি, বইমেলা কমিটির যুগ্ম সমন্বয়ক আবদুর রাজ্জাক, মনিরুজ্জামান, সদস্য আবদুল আজিজ।
আয়োজকেরা জানান, বিজয় বইমেলায় মোট ১৭০টি স্টল রয়েছে। দেশের অন্যতম প্রধান ১৪০টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান মেলায় অংশ নিয়েছে। মেলায় ২৫ শতাংশ কমিশনে বই বিক্রি করা হবে। প্রতি কর্মদিবসে বেলা আড়াইটা থেকে রাত ৯টা এবং ছুটির দিনে বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা খোলা থাকবে। চলবে ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
মেলায় প্রতিদিনই বিকেলে বর্ধমান হাউসের পাশে ‘বিজয় মঞ্চে’ এবং বটতলার ‘নজরুল মঞ্চে’ থাকবে আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও শিশু-কিশোরদের জন্য বিশেষ আয়োজন।
একাডেমির প্রাঙ্গণজুড়ে স্টলের সারি তৈরি করা হয়েছে। প্রতিটি স্টলের মাথায় রয়েছে ‘বিজয় বইমেলা’ লেখা একই রকম নকশার ডিজিটাল নামফলক। শুধু প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম আলাদা। প্রথম দিনের মেলায় যেমন দৃশ্য দেখা যায়, তেমনই ছিল পরিবেশ। বিক্রয়কর্মীরা বই সাজাতে ব্যস্ত ছিলেন। লোকসমাগমও বিশেষ ছিল না। তবে আজ দ্বিতীয় দিন থেকে গ্রন্থানুরাগীদের সমাবেশ বাড়বে বলে প্রকাশকেরা আশা প্রকাশ করেছেন।