ওভার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে অর্থ পাচার ৯০ শতাংশ রোধের দাবি গভর্নরের

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের কর্মকর্তাদের এক প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে  বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারছবি: সংগৃহীত

পণ্য আমদানিতে অতিরিক্ত মূল্য দেখিয়ে (ওভার ইনভয়েসিং করে) দেশ থেকে টাকা পাচারের ঘটনা ৯০ শতাংশ রোধ করা গেছে বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। তিনি বলেন, দেশ থেকে পকেটে করে ডলার পাচারের ঘটনা খুবই কম। বেশির ভাগ টাকা পাচার হয় ব্যবসায়িক চ্যানেলে।

আজ সোমবার পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের কর্মকর্তাদের ‘স্মার্ট ইনভেস্টিগেশন মডেল ফর সিআইডি অফিসার্স’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিআইডির অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ আলী মিয়া।

গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, পণ্য আমদানিতে ‘ওভার ইনভয়েসিং’ মানে হলো অতিরিক্ত অর্থ ব্যাংকিং চ্যানেলেই বিদেশে পাচার হচ্ছে। পণ্যের মূল্যের বিপরীতে পাঠানো অতিরিক্ত অর্থ পরে বিদেশে আমদানিকারকের পক্ষে কেউ গ্রহণ করছে, এমন অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরেই অর্থনীতিবিদদের কাছ থেকে আসছে। আগে ব্যাংকগুলো ঋণপত্র (এলসি) খোলার সময় পণ্যের দাম যাচাই করত না। এখন ব্যাংকের কর্মকর্তারা পণ্যের দাম যাচাই করে এলসি খুলছেন। এতে পাচার কমেছে।

গভর্নর বলেন, যারা রপ্তানিকারক, তারাও কিন্তু রপ্তানির টাকা দেশে না এনে সেখানে রেখে দেন। এটাও মানি লন্ডারিং।

২০২২ সালের শেষ দিকে মানি এক্সচেঞ্জগুলো ডলারের দাম কৃত্রিমভাবে বাড়িয়ে সংকট তৈরি করেছিল বলে উল্লেখ করেন রউফ তালুকদার। তিনি বলেন,  মানি এক্সচেঞ্জাররা যে ডলার খুচরা বিক্রি করে, এটা উল্লেখযোগ্য নয়। সারা বছর তারা সাড়ে ৪ কোটি থেকে ৫ কোটি মার্কিন ডলার কেনাবেচা করে। আর ব্যাংকিং সিস্টেমে মোট লেনদেন হয় ২৭ হাজার কোটি মার্কিন ডলার। ব্যাংকিং সিস্টেমের কাছে মানি এক্সচেঞ্জের ব্যবসা কিছুই না।  

দেশে সাইবার অপরাধ বাড়ছে। সাইবার অপরাধ দমনে গুরুত্ব আরোপ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ৫-৬ ঘণ্টার মধ্যে ১০১ মিলিয়ন ডলার চুরি হয়েছে। কেউ ভল্ট ভেঙে এই ডলার নিতে চাইলে ৮টির মতো ট্রাক লাগত। তাই সাইবার অপরাধ দমনে গুরুত্ব দিতে হবে।

হুন্ডিকে বড় সমস্যা উল্লেখ করে রউফ তালুকদার বলেন, মুঠোফোনে আর্থিক সেবার (এমএসএফ) মাধ্যমে হুন্ডির টাকা লেনদেন হয়। প্রতিদিন এ ধরনের প্রায় ২০০ অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।

কর্মশালায় বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান মো. মাসুদ বিশ্বাস এবং সিআইডির প্রশিক্ষণ উপদেষ্টা মানবসম্পদ উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণ বিশেষজ্ঞ খান সরফরাজ আলী প্রশিক্ষণ দেন।