সংকটের প্রমাণ থাকে একটি শক্তিশালী ছবিতে

আয়োজক ও অতিথিদের সঙ্গে পুরস্কারপ্রাপ্তরাছবি: দীপু মালাকার

বাক্‌স্বাধীনতার সংকট বা ভয়ের সংস্কৃতির উপস্থিতি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে পারে একটি আলোকচিত্র। রাষ্ট্র অনেক ঘটনা পরে অস্বীকার করলেও একটি ছবি ধরে রাখে সেই মুহূর্ত। তাই ছবি হতে হবে এমন, যা ভাবায়। বাংলাদেশ প্রেস ফটো ২০২৩ প্রদর্শনীর উদ্বোধন ও পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে এসব কথা উঠে এল আলোচকদের বক্তব্যে।

আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর পান্থপথে দৃক পাঠভবনে উদ্বোধন হয় প্রদর্শনীর। ২০২২ সালে তোলা ছবির জন্য তিনটি বিভাগে দুজন করে আলোকচিত্রীকে পুরস্কৃত করা হয়। আর একটি ছিল বর্ষসেরা আলোকচিত্র।  

অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে নিউএজ পত্রিকার সম্পাদক নূরুল কবির বলেন, ভালো ছবি তুলতে হলে আলোকচিত্রীর মাথার চোখটাকে পরিষ্কার রাখতে হয়। অনেক রকম প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও বিচারকেরা প্রতিযোগিতার ছবি নির্বাচনে নির্মোহ ছিলেন বলে উল্লেখ করেন তিনি। ২০২২ সালের সেরা আলোকচিত্রটি দেখিয়ে বলেন, এমন একটি ছবি মানুষের প্রতি মানুষের হারানো বিশ্বাস আবার ফিরিয়ে দেয়। ছবিটি ছিল রাজধানীর শহীদনগরে গত বছরের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার। ছবিটি তুলেছিলেন দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার আব্দুল গনি।

রাজনীতি, জনস্বার্থ সাংবাদিকতা এবং শিল্প, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া—এই তিন বিভাগে প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন দেশের বিভিন্ন জেলার আলোকচিত্রীরা।

এ ছাড়া আলোকচিত্র সাংবাদিকতায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করতে এ বছর থেকে ‘ফটোজার্নালিজম ইন মার্জিন’ নামের একটি উদ্যোগ চালু করল দৃক। এর আওতায় এ বছর রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বিভাগে কুতুপালং ক্যাম্পের রো আব্দুল্লাহ এবং ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী বিভাগে রাঙামাটির পদ্মিনী চাকমা প্রাতিষ্ঠানিক স্বল্পমেয়াদি আলোকচিত্র কর্মশালার সুযোগ পাবেন।  

প্রদর্শনীতে ঘুরে ঘুরে ছবি দেখছেন দর্শকেরা
ছবি: দীপু মালাকার

আলোকচিত্রী এবং দৃক-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদুল আলম স্বাগত বক্তব্যে বলেন, অন্যান্য মাধ্যমের চেয়ে আলোকচিত্রীর ভিন্নতা হচ্ছে, ঘটনাস্থলে তাঁর উপস্থিতি। প্রথম আলোকে তিনি বলেন,  বাক্‌স্বাধীনতার সংকট বা ভয়ের সংস্কৃতির উপস্থিতির প্রমাণ দেয় একটি শক্তিশালী ছবি। অনেক কিছুই ঘটনার পরে অস্বীকার করলেও একটি ছবি হতে পারে সেই মুহূর্তের প্রমাণ।

ছবি এবং আলোকচিত্রীর সংগ্রাম নিয়ে কথা বলেন ইত্তেফাক পত্রিকার সম্পাদক তাসমিমা হোসেন। ইচ্ছাশক্তি থাকলে অনেক প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করেও যে একটা ভালো ছবি তোলা যায়, সে কথা উল্লেখ করেন তিনি। প্রতিযোগিতার একজন বিচারক রাশেদ জামান বলেন, যে ছবিটি ভাবতে বাধ্য করে, সেটা সফল ছবি। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন এ এস এম রেজাউর রহমান।

৯ জুন শুরু হওয়া প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে মোট ৩১টি ছবি। ১৮ জুন পর্যন্ত  প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দৃক পাঠভবনে চলবে প্রদর্শনী।