বিগত সরকারের আমলে পাঠাগারের নামে লুটপাট হয়েছে: সংস্কৃতি উপদেষ্টা

জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন‍ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। রাজধানীর জাতীয় জাদুঘর, আজ ৪ ফেব্রুয়ারিছবি: প্রথম আলো

প্রতিবছর সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দেশের বিভিন্ন বেসরকারি পাঠাগারে বরাদ্দ দেওয়ার ক্ষেত্রে অনিয়ম হয়েছে। এমনকি অনুমোদন নিতে ভুয়া পাঠাগার তৈরি করা হয়েছে। বিগত সরকারের আমলে পাঠাগারের নামে লুটপাট করা হয়েছে।

জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস উদ্‌যাপন উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

আগামীকাল বুধবার ৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস। ‘সমৃদ্ধ হোক গ্রন্থাগার, এই আমাদের অঙ্গীকার’ শিরোনামে এবার দেশব্যাপী জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস উদ্‌যাপন করা হবে। সংবাদ সম্মেলনে দিবসটির কর্মসূচি তুলে ধরা হয়।

সংস্কৃতি উপদেষ্টা বলেন, সুফিয়া কামাল জাতীয় গণগ্রন্থাগারে ২ লাখ ৬০ হাজারের বেশি বই রয়েছে। গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরের আওতায় সারা দেশে আছে মোট ৭১টি সরকারি পাঠাগার।

ফারুকী বলেন, ‘বিগত সরকার ডিজিটাল যুগে প্রবেশ করেছিল সত্যি। তবে কখনো বই নিয়ে ভাবেনি। এখন আমরা চেষ্টা করছি। আগামী তিন বছরের মধ্যে পাবলিক লাইব্রেরির সব বই ই-বুক করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।’

সংবাদ সম্মেলনে বেসরকারি গ্রন্থাগারগুলোতে বরাদ্দের অনিয়ম নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা বলেন, ‘সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের বাজেট খুব সামান্য। এর মধ্যেও বিগত সরকারের আমলে পাঠাগারের নামে লুটপাট হয়েছে। অনুদান নিতে এমন পাঠাগার তৈরি করা হয়েছে, যেখানে বই বা পাঠক—কিছুই নেই। এখন সেসব পাঠাগার পরিদর্শন করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, আগামী অর্থবছর কোন কোন পাঠাগার বরাদ্দ পাবে।’

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দেশের ১০টি সরকারি পাঠাগার খোলা রাখার সময় পরিবর্তন করে বিকেল ৫টার পরিবর্তে সন্ধ্যা ৭টা করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মনীষ চাকমা। তিনি বলেন, বিগত সরকারের সময় প্রকাশিত অসম্পাদিত ও বিতর্কিত বইগুলো সব পাঠাগার থেকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে পাঠাগারগুলোর বই সংগ্রহের নীতিমালা প্রসঙ্গে তিনি জনবল সংকটের কথা উল্লেখ করেন। ব্যক্তির নামে পাঠাগার না থাকাই শ্রেয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এমনকি সুফিয়া কামাল পাঠাগারের নাম নিয়েও তিনি একই মন্তব্য করেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতিসচিব মফিদুর রহমান, অতিরিক্ত সচিব ও জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক নাফিজা শ্যামা।

জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস উপলক্ষে আগামীকাল জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে ‘সমৃদ্ধ গ্রন্থাগার বিনির্মাণে আমাদের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। ১৯৫৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। ১৯৫৮ সালের ২২ মার্চ ১০ হাজার ৪০টি বই নিয়ে শুরু হয় গণগ্রন্থাগারের যাত্রা। ২০১৮ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ‘জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস’ উদ্‌যাপন করা হচ্ছে।