এলপিজি সিলিন্ডার ১০০ থেকে ২০০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে: জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ ‘হোটেল-রেস্তোরাঁয় এলপিজি সিলিন্ডারের নিরাপদ ব্যবহার’ শীর্ষক কর্মশালায় বক্তব্য দেন। ঢাকা, ২৪ সেপ্টেম্বর
ছবি: বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সৌজন্যে

সহনীয় দামে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) বিক্রি করতে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস অব্যাহত রাখতে হবে বলে আহ্বান জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি বলেন, এলপিজি সিলিন্ডার বিক্রিতে পরিবেশকদের অনেক এজেন্ট থাকে। তাদের আরও সাব–এজেন্ট থাকে। তিন-চার হাত ঘুরে ক্রেতার কাছে যায়। এতে ঘোষিত দামের চেয়ে ১০০ থেকে ২০০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর টিসিবি ভবনে আয়োজিত ‘হোটেল-রেস্তোরাঁয় এলপিজি সিলিন্ডারের নিরাপদ ব্যবহার’ শীর্ষক এক কর্মশালায় আজ এসব কথা বলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) এ কর্মশালার আয়োজন করে। প্রতি মাসেই এলপিজির দাম নির্ধারণ করে বিইআরসি। তবে এ দামে বাজারে বিক্রি হয় না বলে অভিযোগ আছে।

এলপিজি খাতের সব ব্যবসায়ীকে নজরদারির মধ্যে আনতে হবে বলে জানিয়েছেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, কমিশন দামের বিষয়টি নজরদারি করছে। তবে বাজারে খুচরা বিক্রেতারা বিভিন্ন উপায়ে দামটা বাড়ায়। এলপিজি পরিবেশকদের যারা নিয়ন্ত্রণ করে, তাদেরও দায়িত্ব আছে। কমিশন হয়তো কোনো কোনো এলাকায় দাম যাচাই করছে। পরিবেশকদের দায়িত্ব তার এলাকায় দাম নিশ্চিত করা।

অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে এলপিজির চাহিদা ছিল প্রায় ৬৬ হাজার টনের মতো। বর্তমানে যা ১৪ লাখ টনের বেশি। হোটেল–রেস্তোরাঁয় এলপিজি সিলিন্ডার ব্যবহারের জন্য নীতিমালার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, যেকোনো দোকানে ৪ থেকে ৫টা সিলিন্ডার সামনে রেখে দেয়। হোটেলে চুলার পাশে রেখে দিচ্ছে। এগুলো খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। যেকোনো সময় যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। বিইআরসির পাশাপাশি রাজউক, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, কক্সবাজার সিটি ডেভেলপমেন্ট অথরিটির মতো সংস্থাগুলোকেও এ বিষয়ে নজর দিতে হবে।

আবাসিক ভবনগুলোতে এখন আর পাইপলাইনের গ্যাসের প্রয়োজন নেই উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, উঁচু ভবনের নিচে ট্যাংক বসিয়ে সবাই কিন্তু খুব সহজে ও নিরাপদে এলপিজি ব্যবহার করতে পারেন। এলাকাভিত্তিকও এ ধরনের ট্যাংক বসানোর কাজ করা যেতে পারে।

জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন, তিতাসের পাইপলাইনগুলো অনেক পুরোনো হয়ে গেছে। ৫০-৬০ বছরের পুরোনো। অধিকাংশ পাইপলাইনে ছিদ্র আছে। অনেক চোরাই লাইন তৈরি হয়েছে। বিচ্ছিন্নভাবে বছরের পর বছর ধরে এ কাজগুলো হয়ে আসছে। এগুলোর সমাধানে বড় প্রকল্প নিয়েছে তিতাস। সে প্রকল্প শেষ হতেও ৪ থেকে ৫ বছর সময় লাগবে।

বিইআরসির চেয়ারম্যান মো. নুরুল আমিনের সভাপতিত্বে কর্মশালায় জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মো. নুরুল আলম, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার উপস্থিত ছিলেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের সাবেক অধ্যাপক মাকসুদ হেলালী।