নতুন জামা কিনে বাসায় ফিরে বাবা–মা পেলেন মেয়ের ঝুলন্ত লাশ

আত্মহত্যা
প্রতীকী ছবি

ইউসুফ দফাদার থাকেন সৌদি আরবে। গত মঙ্গলবার দেশে ফিরেছেন তিনি। স্ত্রী–সন্তান থাকে রাজধানীর কদমতলীর দনিয়ার একটি বাসায়। দেশে ফেরার পরদিন বুধবার সন্ধ্যায় স্ত্রী ইতি আক্তারকে নিয়ে কেনাকাটা করতে বের হন তিনি। রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ বাসায় ফিরে দেখেন মেয়ে নুসরাত জাহান তাফরিনের (১০) মরদেহ বাসায় একটি কক্ষের জানালার গ্রিলের সঙ্গে ঝুলছে। 

নুসরাত স্থানীয় তালিমুল মিল্লাত মাদ্রাসায় পঞ্চম শ্রেণীতে পড়াশোনা করত। এক ভাই আর এক বোনের মধ্যে সে ছিল বড়। পরিবারের সদস্যদের ধারণা, খেলতে গিয়ে কোনোভাবে গলায় ফাঁস লেগে নুসরাতের মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে।

নুসরাতের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন বাবা ইউসুফ দফাদার। এ সময় ইউসুফ বলেন, নামাজ শেষ করে স্ত্রী ও দুই বছর বয়সী একমাত্র ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে মার্কেটে যাই। নুসরাতের জন্য দুই সেট জামা ছাড়াও পরিবারের অন্যদের জন্য কেনাকাটা করি। বাসায় ফিরে একটি রুমের দরজা বন্ধ পাই। পরে বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক গিয়ে দরজা ভেঙে দেখতে পান, নুসরাত গলায় ফাঁস দিয়েছে।

শিশুটির বাবা বলেন, নুসরাতকে উদ্ধার করে রাত পৌনে দশটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেই। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ইউসুফ দফাদার আরও বলেন, মেয়েটা সবসময় হাসিখুশি থাকতো। কেন এমন হলো বুঝে উঠতে পারছি না। হয়তো খেলতে গিয়ে এমনটা হয়ে থাকতে পারে।

একমাত্র মেয়েকে হারিয়ে বার বার মূর্ছা যাচ্ছিলেন নুসরাতের মা ইতি আক্তার। ঢাকা মেডিকেলে গিয়েও কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। বলছিলেন, ‘মেয়েকে রেখে কেন আমি মার্কেটে গেলাম? আমার নুসরাতকে আর কখনোই ফিরে পাব না। আল্লাহ কেন এমন করলে? আমি এখন কি নিয়ে থাকবো?’

ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া বলেন, ওই শিশুর মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে। তদন্তের পর এ বিষয়ে বিস্তারিত বলা যাবে।