পাঁচ যাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় দুই লঞ্চের ৫ জন রিমান্ডে

তাশরিফ-৪ লঞ্চের রশি ছিঁড়ে একই পরিবারের ৩ যাত্রীসহ ৫ জন নিহত হন। পন্টুনে ভেড়ানোর অপেক্ষায় ফারহান-৬ লঞ্চ (বাঁ পাশে পেছন দিকে)। সদরঘাট, ঢাকা, ১১ এপ্রিল ২০২৪ছবি: আসাদুজ্জামান

রাজধানীর সদরঘাটে এক লঞ্চের ধাক্কায় অপর লঞ্চের ছিঁড়ে আসা রশির আঘাতে পাঁচ যাত্রীর মৃত্যুর হওয়ার ঘটনায় পাঁচজনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া আসামিরা হলেন ফারহান-৬ লঞ্চের প্রথম শ্রেণির মাস্টার আবদুর রউফ (৫৪), দ্বিতীয় শ্রেণির মাস্টার মোহাম্মদ সেলিম হাওলাদার (৫৪), লঞ্চের পরিচালক শাহরুখ খান (৭০), তাসরিফ-৪ লঞ্চের প্রথম শ্রেণির মাস্টার মিজানুর রহমান (৪৮) ও দ্বিতীয় শ্রেণির মাস্টার মো. মনিরুজ্জামান (২৭)।

আজ শুক্রবার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সদরঘাট নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল কালাম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সাত দিন করে রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আজ ওই পাঁচজনকে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম) আদালতে হাজির করা হয়। আসামিদের পক্ষে তাঁদের আইনজীবীরা জামিন আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এর বিরোধিতা করা হয়। শুনানি শেষে আদালত তাঁদের তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আসামিদের এখন জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের ঢাকা নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক ইসমাইল হোসেন বাদী হয়ে ওই ঘটনায় পাঁচজনকে আসামি করে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা করেন।

সদরঘাটে লঞ্চে উঠতে গিয়ে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানো ব্যক্তিদের স্বজনেরা আহাজারি করছেন। আজ বৃহস্পিতবার বিকেলে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মর্গের সামনে
ছবি: তানভীর আহাম্মেদ

ঈদের দিন গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে সদরঘাটের ১১ নম্বর পন্টুনে এমভি তাশরিফ-৪ ও এমভি পূবালী-১ নামে দুটি লঞ্চ রশি দিয়ে বাঁধা ছিল। বেলা তিনটার কিছুক্ষণ আগে এ দুটি লঞ্চের মাঝখান দিয়ে ফারহান-৬ নামের আরেকটি লঞ্চকে পন্টুনে ঢোকানোর চেষ্টা করা হয়। এ সময় এমভি তাশরিফ-৪-এর রশি ছিঁড়ে লঞ্চে ওঠার জন্য পন্টুনে অপেক্ষমাণ পাঁচ যাত্রীকে আঘাত করে। এতে তাঁরা পন্টুনে পড়ে গুরুতর আহত হন। পরে তাঁদের পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসক তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন।

আরও পড়ুন
ঢাকার সদরঘাটে লঞ্চে ওঠার সময় আরেক লঞ্চের রশির আঘাতে প্রাণ হারানো বিল্লাল হোসেন ও তাঁর স্ত্রী মুক্তা বেগম
ছবি: সংগৃহীত

নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে এক পরিবারের তিনজন রয়েছেন। তাঁরা হলেন পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার ঘাটিচোরা গ্রামের বাসিন্দা বিল্লাল হোসেন (৩৭), তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী মুক্তা বেগম (২৬) এবং তাঁদের মেয়ে মাইশা (৩)। নিহত অপর দুজন হলেন পটুয়াখালীর শিখাবদি গ্রামের জয়নাল হাওলাদারের ছেলে রিপন হাওলাদার (২৭) ও ঠাকুরগাঁওয়ের নিশ্চিন্তপুর গ্রামের মোহাম্মদ আবদুল্লাহর ছেলে মোহাম্মদ রবিউল (১৩)।

আরও পড়ুন

এদিকে সদরঘাটে পাঁচজন নিহত হওয়ার ঘটনায় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) পক্ষ থেকে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।