‘আমি যদি একটা সিট না দিই, তোদের কোন বাপ সিট দেবে’

ইডেন মহিলা কলেজ
ফাইল ছবি

রাজধানীর ইডেন মহিলা কলেজে একটি ছাত্রীনিবাসে স্নাতক চতুর্থ বর্ষের কয়েক শিক্ষার্থীকে বের করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রীভা।

ওই রুমে থাকা কয়েক ছাত্রী বলেন, গত এক সপ্তাহের মধ্যে কয়েক দিন ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে না যাওয়ার কারণে কক্ষে এসে তাঁদের বের করে দেওয়ার হুমকি দেন তামান্না।  

সম্প্রতি কলেজের রাজিয়া বেগম ছাত্রীনিবাসের ২০২ নম্বর কক্ষে ঘটনাটি ঘটে। হুমকি দিতে গিয়ে তামান্না ছাত্রীদের বলেছেন, ‘আমি যদি একটা সিট না দিই, তোদের কোন বাপ সিট দেবে? ম্যাডামরা (হল প্রশাসন) দেবে? ক্ষমতা আছে ম্যাডামদের?’

ছাত্রলীগ নেত্রী তামান্নার এই হুমকির ঘটনার একটি অডিও রেকর্ড গতকাল শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। তামান্না বিষয়টি স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছেন।

অডিও রেকর্ডে তামান্না জেসমিনকে বলতে শোনা যায়, ‘বেশি চ্যাটাং চ্যাটাং করতেছিস। এক পায়ে পাড়া দিমু, আরেক পা টাইনা ধইরা ছিঁড়া ফেলমু। চার মাস হয়ে গেছে ফাইজলামি শুরু করছিস৷ তোরা লিগ্যাল তাতে আমার...। কোন হ্যাডাম দেখাইতেছিস তোরা? আমার পলিটিক্যাল রুমে তোরা লিগ্যাল থাকবি কি না, সেটা তোদের বিষয়। কে কে টাকা জমা দিছিস? আমারে দিছিস? বুঝিস না, পলিটিক্যাল রুমে থাকিস! তোদের লিগ্যাল করাইছে, তাতে আমার...? আমি যদি একটা সিট না দেই, ২০২ থেকে তোদের কোন বাপ সিট দেবে? ম্যাডামরা দেবে? ক্ষমতা আছে ম্যাডামদের?’

একপর্যায়ে পাশ থেকে এক ছাত্রী বলেন, ‘ও তো অসুস্থ, বাসায় গেছে।’ এর জবাবে তামান্না জেসমিন বলেন, ‘২০২-এ আর লিগ্যাল কে? তোরা লিগ্যাল, তাতে আমার কি…?আমি কি...তোদের? ম্যাডামদের ক্ষমতা আছে, আমাদের রুম থেকে একটা মেয়েকে বের করার? ইডেন কলেজের প্রিন্সিপালেরও ক্ষমতা নেই এই রুম থেকে একটা মেয়েকে বের করার। রুমটা যেহেতু ইডেন কলেজের প্রেসিডেন্ট নিয়ে নিছে, ইডেন কলেজের প্রেসিডেন্টের ওপরে আর কেউ নাই। একদম গলায় পাড়া দিয়ে ধরতে ইচ্ছা করতেছে।’

এ বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে কল করা হলে তামান্না জেসমিনের নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে। তবে তিনি গতকাল রাতে ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের প্রতিটি কর্মীর সঙ্গে আমার আত্মার সম্পর্ক। এরা আমার পরিবারের সদস্য ছাড়া অন্য কিছু নয়। একান্ত ব্যক্তিগত পরিবেশে হলেও দায়িত্বশীল জায়গা থেকে অসংযত ভাষার প্রয়োগ আমার অপরাধ হয়েছে বলে স্বীকার করছি। ছাত্রলীগ আমাকে এমন শিক্ষা দেয় না। তাই সংগঠনের প্রতি আমি ক্ষমাপ্রার্থী।’


ইডেন কলেজের অধ্যক্ষ সুপ্রিয়া ভট্টাচার্য বলেন, হলের বিষয়টি হল কর্তৃপক্ষ দেখবে। পরিস্থিতি বিবেচনায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।