শাহজালাল বিমানবন্দরে প্রতারক চক্রের প্রধান আটক

গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত মধ্যরাতে জাবেদকে বিমানবন্দর এলাকা থেকে আটক করা হয়
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাত্রী ও দর্শনার্থীদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগে ‘জাবেদ গ্যাং’ নামের একটি চক্রের প্রধান মো. জাবেদকে আটক করেছে বিমানবন্দরের আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত মধ্যরাতে তাঁকে শাহজালাল বিমানবন্দর এলাকা থেকে আটক করা হয়।

জাবেদকে আটকের তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন এপিবিএনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জিয়াউল হক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, জাবেদ দীর্ঘদিন ধরে বিমানবন্দর এলাকায় যাত্রীদের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের প্রতারণা করে আসছিলেন। টাকাকে ডলারে রূপান্তর করে দেওয়ার কথা বলে যাত্রীর টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়ে যেতেন। তিনি সুকৌশলে যাত্রীর পাসপোর্ট এবং ভ্রমণসংক্রান্ত কাগজপত্র নিয়ে পালিয়ে যেতেন। এ ছাড়া জাবেদ পুলিশ পরিচয়ে হুমকি দিয়ে অর্থ আদায়সহ বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত ছিলেন।

এপিবিএন সূত্র জানায়, চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি সিঙ্গাপুরগামী যাত্রী মো. শফিকুল ইসলাম ফ্লাইট মিস করেছেন বলে তাঁর আত্মীয়স্বজনকে ফোন করে জানান জাবেদ। যাত্রীকে নতুন করে টিকিট করে দিতে হবে বলে আত্মীয়স্বজনকে যাত্রীর কণ্ঠ নকল করে ফোনে কান্নাকাটি করেও শোনান তিনি। বলেন, সিঙ্গাপুরে পাঠাতে হলে ৬৮ হাজার টাকা দিয়ে নতুন করে সরাসরি ফ্লাইটের টিকিট করতে হবে। উপায় না দেখে যাত্রীর আত্মীয়স্বজন মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রথমে ৩৭ হাজার ৪৫০ টাকা, এরপর ২৮ হাজার ১০০ টাকা এবং পরে ৬৫ হাজার ৫৫০ টাকা জাবেদকে পাঠান। অথচ যাত্রী মো. শফিকুল ইসলাম তখন সিঙ্গাপুরগামী ফ্লাইটে ছিলেন, যার কারণে তাঁর ফোন তখন বন্ধ ছিল। আর ফোন বন্ধ থাকার কারণে যাত্রীর আত্মীয়স্বজনও কোনো প্রকার সন্দেহ না করে যাত্রীর ফ্লাইটের জন্য জাবেদের কথামতো এই টাকা মুঠোফোনে আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেন। যাত্রীর আত্মীয়স্বজন টাকা পাঠানোর পরপরই জাবেদ তাঁর ফোন বন্ধ করে দেন।

এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা এপিবিএনের কাছে অভিযোগ করলে তদন্ত করে গতকাল মধ্যরাতে জাবেদকে আটক করা হয়। পরে তাঁকে বিমানবন্দর থানায় সোপর্দ করা হয়। তাঁর বাড়ি গাজীপুর সদর উপজেলার তরতপাড়ায়।

এর আগেও বিভিন্ন অভিযোগে জাবেদকে অন্তত চারবার গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তিনি বিভিন্ন মেয়াদে জেল খেটেছেন। পরে জামিনে বেরিয়ে একই ধরনের প্রতারণার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। নিজের নামে তিনি বিমানবন্দরকেন্দ্রিক একটি চক্রও গড়ে তুলেছেন। তাঁর চক্রে পাঁচ-ছয়জন সক্রিয় সদস্য আছেন। এঁদেরও বিভিন্ন সময়ে বিমানবন্দর এপিবিএন গ্রেপ্তার করেছে।