কামরাঙ্গীরচরে দুই সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার চারজন রিমান্ডে

আহত সাংবাদিক হাসান মিসবাহ
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে বেসরকারি ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের দুই সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় এসপিএ রিভার সাইট মেডিকেল সেন্টারের মালিক এম এইচ উসমানি ও দেওয়ান মো. আবু জাহিদসহ গ্রেপ্তার চারজনের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

আজ বুধবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম ফারাহ দিবা ছন্দা এ আদেশ দেন। এর আগে একই দিন সকালে কামরাঙ্গীচরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার অন্য দুই আসামি হলেন রাসেল দেওয়ান ও মো. মাসুম।

গতকাল মঙ্গলবার কামরাঙ্গীরচরে এসপিএ ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতালে ভুয়া চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা করার অভিযোগের অনুসন্ধানে গিয়ে ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক হাসান মিসবাহ ও জ্যেষ্ঠ ভিডিওগ্রাফার সাজু মিয়ার ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। হাসপাতালের মালিক এম এইচ উসমানীর নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা তাঁদের ওপর হামলা ও মারধর করেন। ক্যামেরা ভাঙচুর করে ছিনিয়ে নেওয়া হয় তাঁদের মুঠোফোন ও গাড়ির চাবি। প্রায় দুই ঘণ্টা আটকেও রাখা হয় তাঁদের।

পুলিশ জানায়, দুই সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় আজ সকালে ১০ থেকে ১৫ জনের বিরুদ্ধে কামরাঙ্গীরচর থানায় মামলা করেন হাসান মিসবাহ। পুলিশ বলছে, হামলায় জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

আহত ভিডিওগ্রাফার সাজু মিয়া
ছবি: সংগৃহীত

আহত হাসান মিসবাহ প্রথম আলোকে বলেন, ওই হাসপাতালে একজন ভুয়া চিকিৎসক বসেন। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একজন চিকিৎসকের ডিগ্রি ব্যবহার করে চিকিৎসা দেন। বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান করতে গেলে আমাকে ও ভিডিওগ্রাফার সাজু ও ড্রাইভারকে মারধর করা হয়।

হাসান মিসবাহ অভিযোগ করেন, ‘আমাদের ওপর হামলার ঘটনাটি পুলিশকে জানালে ঘটনাস্থলে আসেন উপপরিদর্শক (এসআই) মিলন হোসেন। তিনি পরিচয় জানতে চাইলে আমরা পরিচয় দিই। এরপর কার্ড চাইলে সাজু ভাই তাঁর কার্ড বের করে দেন। কার্ড হাতে নিয়ে পুলিশ সদস্য মিলন বলেন, ‘‘তোরা ভুয়া সাংবাদিক।’’ একপর্যায়ে উনি কোনো কথা না শুনে চেয়ার থেকে উঠে আমার দিকে তেড়ে আসেন এবং আমার মুখে আঘাত করেন।’

লালবাগ বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মো. জাফর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সাংবাদিকদের মারধরের ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া সাংবাদিকের সঙ্গে অসদাচরণ করার জন্য এসআই মিলনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি করা হয়েছে।

এদিকে আজ দুপুরে হাসপাতালটি পরিদর্শন করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোনো লাইসেন্স নেই, তাই প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করার নির্দেশনা দেওয়া যেতে পারে।