পূর্ব জুরাইনের কিছু সড়ক এখনো পানির নিচে, ভোগান্তিতে বাসিন্দারা

পূর্ব জুরাইনের একটি সড়ক এখনো পানির নিচে। রাত সাড়ে আটটা। ২৮ মেছবি: সংগৃহীত

ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে ভারী বৃষ্টিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৫৩ নম্বর ওয়ার্ডের (পূর্ব জুরাইন) কিছু সড়ক এখনো পানির নিচে। ফলে ওই ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের বেশ দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। ওই এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা আজ মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটার দিকে প্রথম আলোকে এই তথ্য জানিয়েছেন।

ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে গতকাল সোমবার সকাল থেকেই রাজধানীতে ঝোড়ো বাতাস ও বৃষ্টি শুরু হয়। বৃষ্টির তীব্রতা কমে আসে গতকাল মধ্যরাতে। পুরোপুরি বৃষ্টি থামে ভোররাতে। তবে আজ দুপুরের দিকেও সায়েদাবাদ, আরামবাগ, মতিঝিল, নিউমার্কেট এলাকার কিছু কিছু সড়কে হাঁটুসমান, কোথাও কোমরসমান পানি ছিল। ফলে কর্মজীবী মানুষকে ঘর থেকে বেরিয়ে বিড়ম্বনার মধ্যে পড়তে হয়।

নাগরিক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত পূর্ব জুরাইন এলাকার বাসিন্দা মিজানুর রহমান আজ মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটার দিকে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, পূর্ব জুরাইনের কমিশনার রোড, ঋষিপাড়া, ১ নম্বর সড়ক, কুসুমবাগ, নবীনবাগ, সবুজবাগ, কলেজ রোডসহ পুরো এলাকার সড়ক এখনো পানির নিচে।

পূর্ব জুরাইনের আরেকটি সড়ক। এই সড়কের পাশের অনেক দোকানে পানি ঢুকে পড়েছে। ২৮ মে রাত।
ছবি: সংগৃহীত

গতকাল রাজধানীর দক্ষিণ সিটি করপোরেশন জলাবদ্ধতা নিরসনে এক হট নম্বর চালু করেছে। করপোরেশনের আওতাধীন এলাকায় কোথাও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হলে নগরবাসীকে ০১৭০৯৯০০৮৮৮ নম্বরে ফোন করার অনুরোধ করা হয়।

এই হট নম্বরে ফোন করেছেন কি না, জানতে চাইলে পূর্ব জুরাইন এলাকার বাসিন্দা মিজানুর বলেন, বিষয়টি তিনি জানেন না।

পূর্ব জুরাইনের কনকর্ড আইডিয়াল স্কুলের গলিতে বেলা আড়াইটায় ছিল এই দশা
ছবি: মোহাম্মদ সোলায়মান

প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পূর্ব জুরাইন এলাকার সড়কগুলোতে পানি থাকার কারণে বেশির ভাগ বাসিন্দা জরুরি কাজ না থাকলে ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। দোকানপাটেও পানি উঠেছে। তাই বেশির ভাগ দোকান বন্ধ রাখা হয়েছে। এই পানি কখন নামবে, তা নিয়ে তাঁরা উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন।

এ ছাড়া দক্ষিণ দনিয়ার জিয়া স্মরণি, শনির আখড়া, যাত্রাবাড়ীর কিছু এলাকা, কদমতলী থানার মোহাম্মদবাগ, রায়েরবাগ ও মেরাজনগর এলাকার কয়েকটি সড়কে এখনো পানি জমে আছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

দুপুর সাড়ে ১২টায় আরামবাগের সড়কে ছিল এই পানি
ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

১২ ঘণ্টার বেশি সময় আগে বৃষ্টি বন্ধ হলেও সড়ক থেকে কেন পানি সরছে না, এ বিষয়ে জানতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের মুঠোফোনে কল করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। পরে জলাবদ্ধতা নিরসনের দায়িত্বে থাকা সংস্থাটির প্রকৌশলী খায়রুল বাকেরের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি ফোন ধরেননি।

তবে জলাবদ্ধতা নিরসনে ঢাকা দক্ষিণ সিটির গৃহীত কার্যক্রম নিয়ে গণমাধ্যমে কিছু তথ্য পাঠিয়েছেন সংস্থাটির মুখপাত্র ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবু নাছের। তিনি সেখানে উল্লেখ করেছেন, রাস্তা থেকে পানি সরাতে করপোরেশন গঠিত ৯১টি দলের পাশাপাশি বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২ হাজার ৫০০ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী জলাবদ্ধতা ও জলজট নিরসনে কাজ করছেন।

এ ছাড়া ঘূর্ণিঝড় রিমাল মোকাবিলায় সিটি করপোরেশনে স্থাপিত নিয়ন্ত্রণ কক্ষে মোট (আজ বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত) ১২০টি ফোন কল এসেছে বলেও জানান মো. আবু নাছের। এর মধ্যে অতিবৃষ্টিজনিত জলজটসংক্রান্ত ফোন কলের সংখ্যা ৭৮টি। কল পেয়ে সেসব স্থানে করপোরেশনের লোকবল কাজ করছেন।