নারীকে মারধর ও নির্যাতনের মামলায় টিকটকার প্রিন্স মামুনের বিচার শুরু
এক নারীকে মারধর ও হত্যাচেষ্টার মামলায় টিকটকার আবদুল্লাহ আল মামুন ওরফে প্রিন্স মামুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। আগামী ১ মার্চ মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করা হয়েছে।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (এসিএমএম) মো. মাহবুবুল হক আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন।
প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাদীপক্ষের আইনজীবী ইশরাত হাসান।
আইনজীবী ঈশরাত হাসান প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর মক্কেল ভুক্তভোগী নারীর করা মারধর ও হত্যাচেষ্টা মামলায় আজ টিকটকার আবদুল্লাহ আল মামুন ওরফে প্রিন্স মামুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। এ সময় আসামি মামুন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মামলার কাগজপত্রের তথ্য বলছে, মারধর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ২০২৩ সালের ১২ ডিসেম্বর প্রিন্স মামুনের বিরুদ্ধে ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী ওই নারী। মামলাটি তদন্ত করে গত বছরের ৩১ জানুয়ারি তাঁর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ।
মামলায় ভুক্তভোগী নারী অভিযোগ করেন, ফেসবুকের মাধ্যমে প্রিন্স মামুনের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। পরে তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তখন থেকেই প্রিন্স মামুন ওই নারীর বাসায় থাকতে শুরু করেন। নানা অজুহাতে মামুন ওই নারীর কাছ থেকে টাকা নিতেন। প্রায় সময় মাদক সেবন করে গভীর রাতে বাসায় ফিরতেন। ২০২৩ সালের ১১ ডিসেম্বর একটি জন্মদিনের অনুষ্ঠান শেষে বাসায় ফেরেন তাঁরা। একপর্যায়ে ওই নারীকে মারধর করেন প্রিন্স মামুন।
প্রিন্স মামুনের বিরুদ্ধে ওই নারীর করা আরেকটি ধর্ষণ মামলা ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৯-এ বিচারাধীন।
গত বছরের অক্টোবরে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। পরে নভেম্বরে মামলাটি বিচারের জন্য নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৯-এ স্থানান্তর করা হয়।
গত বছরের ১০ জুন কুমিল্লা থেকে মামুনকে গ্রেপ্তার করে ক্যান্টনমেন্ট থানা-পুলিশ। পরদিন তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে প্রিন্স মামুনের বিরুদ্ধে রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা করেন ওই নারী। পরে গত বছরের ১ জুলাই ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত থেকে জামিন পান মামুন। মামুনের পক্ষ থেকে আদালতে দাবি করা হয়, তিনি নিরপরাধ। হয়রানি করতে তাঁকে মামলার আসামি করা হয়েছে।
তবে ধর্ষণ মামলায় ওই নারীর অভিযোগ, ২০২২ সালের ৭ জানুয়ারি থেকে মামুন তাঁর মাকে নিয়ে ওই নারীর বাসায় বসবাস করতে থাকেন। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাঁর ইচ্ছার বিরুদ্ধে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। একাধিকবার বিয়ের বিষয়ে বললেও মামুন বিভিন্ন অজুহাতে সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন। সর্বশেষ গত বছরের ১৪ মার্চ মামুন তাঁকে বিয়ে করবেন, এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণ করেন। পরে তিনি বিয়ের কথা বললে মামুন খেপে যান ও গালাগাল করেন। মামুনের মা-বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাঁরাও তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন।