ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলের শতবর্ষী ভবন ভাঙার প্রতিবাদে মানববন্ধন

২০০ বছরের পুরোনো ভবন ভাঙার প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। ঢাকা, ২১ মার্চছবি: প্রথম আলো

ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল প্রাঙ্গণে অবস্থিত প্রায় ২০০ বছরের পুরোনো স্থাপনা ভেঙে ফেলা হচ্ছে। এর প্রতিবাদে রাজধানীতে মানববন্ধন করেছে আরবান স্টাডি গ্রুপ। মানববন্ধন থেকে ভবন ভাঙা বন্ধ করার দাবি জানানো হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে স্কুলের সামনে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।  

স্থাপনাটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব অপরিসীম উল্লেখ করে আরবান স্টাডি গ্রুপের প্রধান নির্বাহী তাইমুর ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, সাবেক যে শিক্ষার্থীরা এখানে ক্লাস পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন, তাঁদের কাছে এটা একটি অকৃত্রিম স্মৃতি। ইতিহাসবিদেরা ভবনটিকে ব্রিটিশ আমলের ডাকবাংলো হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। মতান্তরে পর্তুগিজদের রেস্টহাউসও বলা হয়। সেই অর্থে ভবনটি আরও প্রাচীন। তবে মূল স্থাপনাটি যে মোগল আমলে নির্মিত, তাতে সন্দেহের অবকাশ নেই। এসব নিরিখে ভবনটির ঐতিহাসিক মূল্য ও গুরুত্ব অপরিসীম।

তাইমুর ইসলাম আরও বলেন, আরবান স্টাডি গ্রুপের দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের ২ হাজার ২০০ ভবনে যেকোনো রকম পরিবর্তনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন হাইকোর্ট। এ অবস্থায় ভবনটি ভেঙে ফেলার কার্যক্রম অবশ্যই আদালত অবমাননার শামিল।

মানববন্ধনে ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলের সাবেক ছাত্র মেসবাউল ইসলাম বলেন, ‘ভবন ভাঙার হাতুড়ির আঘাতগুলো বুকে আঘাত করছে। এই ভবনে একসময় ক্লাস করতাম। সংস্কারের গুরুত্ব না দিয়ে ভেঙে ফেলা মেনে নিতে পারছি না।’

মানববন্ধনে অংশ নেন সেভ দ্য হেরিটেজের সদস্য ওয়ালিউল হক, ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেক্টস বাংলাদেশের স্থপতি জিয়াউল উল শরিফ, স্থপতি সামিরা ইসলাম, স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন।

প্রাচীন ভবনটি ভাঙার কাজ চলছে । ঢাকা, ২১ মার্চ
ছবি: প্রথম আলো

জানতে চাইলে ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক আরিফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়েই ভবনটি ভাঙার উদ্যোগ নিয়েছি। কেউ যদি অনুমতির কাগজপত্র দেখতে চান, দেখাতে পারি। ভবনটি অনেক ঝুঁকিপূর্ণ। প্রায়ই শিক্ষক–শিক্ষার্থীরা দুর্ঘটনায় পড়েন।’

সরেজমিন স্কুলটির শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ক্লাস ও পরীক্ষা চলার মধ্যে কয়েক দিন ধরে স্কুল প্রাঙ্গণে অবস্থিত দ্বিতল ভবনটি ভাঙার কাজ চলছে। এর মধ্যে ভবনটির দরজা–জানালা ভেঙে অপসারণ করা হয়েছে। ছাদের কিছু অংশও ভেঙে ফেলা হয়েছে।