ক্রেনচালকসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করলেন নিহত রুবেলের স্ত্রী

বৌভাতের অনুষ্ঠান শেষ করে ফিরছিলেন বাসায়। পথে নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের গার্ডার প্রাইভেট কারের ওপর পড়ে নিহত হয়েছেন পাঁচজন
প্রথম আলো ফাইল ছবি

রাজধানীর উত্তরায় বিআরটি প্রকল্পের গার্ডারচাপায় প্রাইভেট কারের পাঁচ আরোহী নিহতের ঘটনায় ক্রেনচালক আল আমিনসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে মামলা হয়েছে। নিহত আয়ুব হোসেন ওরফে রুবেলের স্ত্রী শাহিদা খানম আজ রোববার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে এ মামলা দায়ের করেন।

সিএমএম আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিম মামলাটি তদন্ত করে আগামী ৯ নভেম্বরের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী রাকিব চৌধুরী।

মামলার অপর নয়জন আসামি হলেন সেফটি ইঞ্জিনিয়ার জুলফিকার আলী শাহ, চালকের সহকারী রাকিব হোসেন, রুবেল, আফরোজ মিয়া, ইফতেখার হোসেন, আজহারুল ইসলাম, তোফাজ্জল হোসেন, রুহুল আমিন ও মঞ্জুরুল ইসলাম। মামলার আরজিতে বলা হয়, ক্রেনচালক আল আমিন নিজ দায়িত্ব পালন না করে বেআইনিভাবে তাঁর সহকারীকে দিয়ে কাজ করান।

১৫ আগস্ট বিকেলে রাজধানীর উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের প্যারাডাইস টাওয়ারের সামনের সড়কে চলন্ত প্রাইভেট কারের ওপর বাস র‍্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের গার্ডার পড়ে। এতে ঘটনাস্থলে পাঁচজন নিহত ও দুজন গুরুতর আহত হন। সেখানে নির্মাণকাজ করছিল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না গেজুবা গ্রুপ কোম্পানি (সিজিজিসি)। ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে এই প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কথা উঠে এসেছে। এ ঘটনায় নিহত রিয়ার মামা আফরান মন্ডল বাদী হয়ে উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা করেন।

পরে ক্রেনচালক, তাঁর সহকারী, নিরাপত্তার জন্য নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তাকর্মীসহ ১০ জনকে ঢাকা, গাজীপুর, সিরাজগঞ্জ ও বাগেরহাট থেকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। গত শুক্রবার তাঁদের বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত।

আরও পড়ুন

উত্তরা পশ্চিম থানার পক্ষ থেকে আদালতকে লিখিতভাবে জানানো হয়, ক্রেনচালক আল আমিন কিংবা তাঁর সহকারী রাকিব হোসেনের ক্রেন চালানোর প্রাতিষ্ঠানিক কোনো প্রশিক্ষণ নেই। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তাঁদের খামখেয়ালিভাবে নিয়োগ দিয়েছিল। সেদিন ক্রেনচালক আল আমিন নিচে ছিলেন, ক্রেন চালাচ্ছিলেন তাঁর সহকারী রাকিব। বহুদিন ধরে আসামিরা ঝুঁকিপূর্ণভাবে ক্রেন ব্যবহার করে আসছিলেন।

আসামিদের গ্রেপ্তার করার পর র‍্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়, ক্রেনচালক আল আমিনের হালকা গাড়ি চালানোর অনুমোদন থাকলেও ভারী গাড়ি চালানোর লাইসেন্স নেই। ২০১৬ সালে ক্রেন চালনার প্রশিক্ষণ নিয়ে দুই-তিনটি নির্মাণ প্রকল্পে কাজ করেন। গত মে মাস থেকে বিআরটি প্রকল্পে ক্রেন অপারেটর হিসেবে কাজ করছেন। আর রাকিব তিন মাস আগে এ প্রকল্পের ক্রেন হেলপার হিসেবে কাজ শুরু করেন। তাঁর ক্রেন চালানোর প্রশিক্ষণ নেই।

আরও পড়ুন