ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের মারধরের প্রতিবাদে দুই ঘণ্টা অবরোধ

সহপাঠীদের মারধরের প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার থেকে চাঁনখারপুল এলাকায় নামার পথটি অবরোধ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা
ছবি: প্রথম আলো

চার সহপাঠীকে মারধরের প্রতিবাদে রাজধানীর আনন্দবাজারসংলগ্ন মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারে ওঠার মুখের রাস্তা দুই ঘণ্টার মতো অবরোধ করে রেখেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাতটার পর তাঁরা এই অবরোধ করেন। এতে হানিফ ফ্লাইওভারে ওঠানামার সড়কসহ আশপাশের সব সড়কে যান চালাচল বন্ধ হয়ে তীব্র যানজট তৈরি হয়।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এক ওয়ার্ড কাউন্সিলরের অনুসারীরা সন্ধ্যায় বিনা কারণে অমর একুশে হলের চার ছাত্রকে মারধর করেছেন। ওই ছাত্ররা ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত। এ ঘটনার বিচার চেয়ে শিক্ষার্থীরা মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের যাত্রাবাড়ী থেকে পলাশীমুখী সড়কের মুখ (ফ্লাইওভারে ওঠার স্থান) অবরোধ করেন।

অমর একুশে হলের এক ছাত্র প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের হলের সামনে সব সময়ই যানজট লেগে থাকে। সন্ধ্যার আগে আমাদের কয়েকজন বড় ভাই রাস্তার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় ঢাকার একজন ওয়ার্ড কাউন্সিলরের সমর্থকেরা ১০-১৫টি মোটরসাইকেল নিয়ে উল্টো পথে আসেন। আমাদের এক বড় ভাই, তাঁদের কাছে উল্টো পথে আসার কারণ জানতে চাইলে তাঁরা মারধর শুরু করেন। এতে চার ছাত্র আহত হন।’

এ সময় ছাত্রদের রক্ষায় হলের কর্মীরা এগিয়ে এলেও তাঁদেরও মারধর করা হয় বলে জানান ওই শিক্ষার্থী। ঘটনার সময় ওই কাউন্সিলর সেখানে উপস্থিত ছিলেন এবং তিনি অস্ত্র দেখিয়েছেন বলেও অভিযোগ বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের।

এ ঘটনার প্রতিবাদে সন্ধ্যা সাতটার পরপরই রাস্তা অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এতে ফ্লাইওভারসংলগ্ন এলাকাসহ আশপাশের সড়কগুলোয় তীব্র যানজট তৈরি হয়।

একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে আসেন ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মাজহারুল কবির (শয়ন) ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান (সৈকত)। তাঁরা বোঝানোর পর রাত নয়টার দিকে ফ্লাইওভারে ওঠার রাস্তাটি ছেড়ে দেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। তবে তখনো ফ্লাইওভারের নিচ দিয়ে গুলিস্তানগামী সড়কটি আটকে রেখেছিলেন তাঁরা। কিছুক্ষণ পর শিক্ষার্থীরা ওই সড়কও ছেড়ে দেয়। পরে ধীরে ধীরে আশপাশের সড়কের যানজট কমতে থাকে।

শিক্ষার্থীরা যে কাউন্সিলরের অনুসারীদের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ করেছেন, সেই কাউন্সিলরও একসময় ছাত্রলীগ করতেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমি ছাত্রলীগ করে এসেছি। আমি কেন ছাত্রলীগের ওপর হামলা করব?’

তিনি তখন ওই সড়কে যাননি দাবি ওই কাউন্সিলর বলেন, ‘প্রয়োজনে আমার মুঠোফোনের অবস্থান ট্র্যাক করে দেখা যেতে পারে। যাঁরা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে ষড়যন্ত্র করছেন, তাঁরা এটি কেন করছেন—আমি সেই জবাব চাই।’