জরায়ুর ক্যানসার প্রতিরোধে কিশোরীদের টিকার নিবন্ধন শুরু

রাজধানীর মহাখালীর নিপসম মিলনায়তনে এইচপিভি টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক
ছবি: ইউনিসেফের সৌজন্যে

জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রতিরোধে কিশোরীদের এইচপিভি টিকার নিবন্ধন শুরু হয়েছে আজ সোমবার। রাজধানীর মহাখালীর নিপসম মিলনায়তনে এইচপিভি টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এই কর্মসূচির আওতায় ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী; অর্থাৎ পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত মেয়েশিক্ষার্থীরা বিনা মূল্যে এক ডোজ করে টিকা পাবে। এটি পরিচালনা করবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই)।

www.vaxepi.gov.bd এই ঠিকানায় নিবন্ধন করে টিকা নিতে হবে। ১৫ অক্টোবর থেকে ঢাকার স্কুলগুলোতে ও স্কুলের বাইরে এই টিকা দেওয়া হবে। প্রথম দফায় শুধু ঢাকা বিভাগে এই টিকা দেওয়া হবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কয়েকজন কিশোরীকে টিকা দেওয়া হয়।

ইপিআইয়ের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে জানা গেছে, এর আগে ৪ অক্টোবর রাজধানী ঢাকার একটি স্কুল থেকে এইচপিভি টিকা কর্মসূচি শুরু করার সিদ্ধান্ত ছিল। তবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ওই দিন ব্যস্ত থাকবেন বলে হুট করেই সময় দুই দিন এগিয়ে আজ উদ্বোধন করা হয়। গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনস অ্যান্ড ইমিউনাইজেশনস (গ্যাভি) বাংলাদেশকে ২৩ লাখ টিকা দিয়েছে। প্রথম দফায় ঢাকা বিভাগের সব স্কুলের কিশোরীদের টিকা দেওয়া হবে। ২০ লাখের মতো কিশোরীকে টিকা দেওয়া হবে। আরও টিকা পাওয়ার পর আগামী বছরের বিভিন্ন সময়ে বাকি পাঁচ বিভাগে টিকা দেওয়া হবে।

হিউম্যান পেপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) জরায়ুমুখ ক্যানসারের জন্য দায়ী একটি ভাইরাস। ইপিআই থেকে জানা গেছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) হালনাগাদ সুপারিশে এক ডোজ এইচপিভি টিকাই কার্যকর বলে জানানো হয়েছে। এক কোটির বেশি কিশোরীকে লক্ষ্য রেখে টিকার কার্যক্রম শুরু করা হবে।

ইপিআই আরও জানিয়েছে, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এইচপিভি টিকা পাওয়া কিশোরীদের পর্যবেক্ষণ করে ১৫ অক্টোবর থেকে ঢাকা বিভাগের সব জেলা, উপজেলা, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভায় একসঙ্গে চার সপ্তাহ বা এক মাসে মোট ১৮ কর্মদিবসে এইচপিভি টিকাদান কর্মসূচি চলবে। প্রথম ১০ কর্মদিবস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অর্থাৎ ১৫ থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এইচপিভি কার্যক্রম শেষ করা হবে। ৪ থেকে ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত ৮ কর্মদিবসে স্কুলের বাইরে এলাকায় এলাকায় টিকা দেওয়া হবে।

২০২০ সালের গ্লোবোক্যান প্রতিবেদন অনুসারে, জরায়ুমুখের ক্যানসারে আক্রান্তের দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান পঞ্চম। বছরে নতুন করে আক্রান্ত হন ৮ হাজার ২৬৮ জন এবং বছরে মারা যান ৪ হাজার ৯৭১ জন।

আজ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, বিভিন্ন দেশে টিকা সরবরাহবিষয়ক গ্যাভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (কান্ট্রি প্রোগ্রাম ডেলিভারি) থাবানি মাফোসা, বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট, বাংলাদেশে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি বারদান জাং রানা প্রমুখ।